কুমার নদের তীরের তিন’শ মিটার অংশে ধ্বস
ফরিদপুর প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ০৬:০৯ পিএম, ১ ডিসেম্বর ২০২০ মঙ্গলবার

ফরিদপুর শহরে কুমার নদের তীরবর্তী এলাকায় প্রায় তিন’শ মিটার অংশে ধ্বসের ঘটনা ঘটেছে। গত শনিবার রাতে আকস্মিক শহরের ভাটি লক্ষিপুর এলাকার কুমার নদের তীরে থাকা কয়েকটি বসত বাড়িঘর ও কবি জসিমউদ্দিন-চুনাঘাট বাইপাস সড়কের বেশ কিছু অংশ নদীর মধ্যে ধ্বসে যায়। এরফলে ধ্বসে যাওয়া দরিদ্র মানুষগুলো এখন মানবেতর ভাবে জীবন যাপন করছে। তবে সংশ্লিষ্টরা বিষয়টি গুরুত্বের সাথে দ্রæত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। এদিকে সোমবার(৩০/১১/২০২০) ক্ষতিগ্রস্থ্য এলাকাবাসী মানববন্ধন করে ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক অতুল সরকারের কাছে স্মারকলিপি জমা দিয়েছেন।
ফরিদপুরের কুমার নদকে জেলার অক্সিজেন খ্যাত নদের আখ্যা দেওয়া হয়। পদ্মা নদীর শাখা এ নদটি পলি বেষ্টিত। যুগ যুগ ধরে এ নদে পলির কারনে নাব্যতা হাড়ায়। বর্তমান সরকার নদটি নাব্যতা ফেরাতে ১শত ৭৫ কোটি টাকার প্রকল্প হাতে নেয়। সে আলোকে গত বছর নদের কাজটি পায় বাংলাদেশ নৌবাহিনী। এরপর তাদের কাছ থেকে সাব কাজটি নেয় বেঙ্গল গ্রæপ। পরবর্তিতে স্থানীয় হাজী মোফাজ্জেল হোসেন নামের এক ঠিকাদার বেঙ্গল গ্রæপ থেকে সাব কাজটি নিয়ে গত অর্থ বছরে কাজ শুরু করে।
ঐ সময় কাজে অনিয়ম, অবৈধভাবে বালু বিক্রি সহ নানা ধরনের অভিযোগ ওঠে ঐ ঠিকাদারের বিরুদ্ধে। কিন্তু তৎকালিন প্রভাবশালী ব্যক্তিদের সাথে তার সখ্যতা থাকায় হাজী মোফাজ্জেল কারো কথা কর্নপাত না করে কাজ চালিয়ে যায়। সে সময় দরিদ্র জনগোষ্টি সংশ্লিষ্টদের কাছে যেয়েও স্থানীয় ক্ষমতাবান ঐ ঠিকাদারের কারনে কোন প্রতিকার পায় নাই।
অপরিকল্পিতভাবে বালু উত্তোলন এবং সেই বালু বিক্রির কারনে আজ এলাকার মানুষের বাড়িঘর ধ্বসে গেছে বলে অভিযোগ করেছে ক্ষতিগ্রস্থ্যরা। এদিকে শহরের বাইপাস সড়ক কবি জসিমউদ্দিন বাড়ি থেকে লক্ষীপুর চুনাঘাটা সড়কে যানবাহন চলাচল ধ্বসের কারনে বন্ধ রয়েছে। স্থানীয় এলাকাবাসী বিয়ষটি তদন্ত করে ঐ ঠিকাদারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থার নেওয়া পাশাপাশি তাদেরকে বসবাসের সু ব্যবস্থার দাবী জানিয়েছেন।
ক্ষতিগ্রস্থ্য আলমাত মীর মালত বলেন, নদের ধ্বসের কারনে আমরা এখন নিঃস্ব। কোথাও আমাদের যাওয়ার জায়গা নাই। আমাদের দিকে দৃষ্টি দেওয়ার জন্য সরকারের কাছে আবেদন করছি। তিনি বলেন, বিষয়টি নিয়ে আমরা পুরো এলাকাবাসী জেলা প্রশাসকের কাছে অভিযোগ জমা দিয়েছি।
মোঃ ফিরোজ নামে একজন বলেন, নদীর খননের পরে প্রভাশালীরা মাটি বিক্রি করার কারনে এই ক্ষতি হয়েছে। এখন কয়েকটি বাড়ি-ঘর বিলিন হলো সামনে শত শত বাড়ি ঘর বিলিন হওয়ার পথে রয়েছে।
বিষয়টি নিয়ে ফরিদপুর পানি উন্নয়ন বিভাগের উপ-পরিচালক সুলতান মাহমুদ বলেন ঘটনা জানার সাথে সাথে আমি ঘটনাস্থলে যায়। বিষয়টি দেখেছি, মানুষের ক্ষতি লাঘবের জন্য আপাতত বামবু প্রজেক্ট হাতে নিয়ে কাজ শুরু করবো বলে তিনি জানান।
অপরদিকে ঘটনা জানার সাথে সাথে ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক অতুল সরকার ও সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মাসুম রেজা ক্ষতিগ্রস্থ্য পরিবার গুলোর পাশে গিয়ে দাঁড়িয়েছেন। তারা ক্ষতিগ্রস্থ্য পরিবারকে আর্থিক সহায়তা দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জেলা প্রশাসন সূত্রে জানেোগছে।
এদিকে সংশ্লিষ্ট বিভাগ বিষয়টি তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিলে এ ধরনের কাজ আর কোন ঠিকাদার করতে পারবে না বলে মত দিয়েছে বিশিষ্টজনেরা। এতে হতদরিদ্র ক্ষতিগ্রস্থ্যরা ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা পাবে।