গুলশান আরা`র একগুচ্ছ কবিতা
প্রকাশিত : ০৪:২৯ পিএম, ৬ অক্টোবর ২০২০ মঙ্গলবার

এক
মন শুধু সুখকেই খোঁজে
অদম্য সুখের সাগরে ভেসে বেড়ায় মন।
দুঃখ সে তো সুখের সুতোয় গাঁথা
তা কি বোঝে?
সুতো কেটেই দুঃখকে জয় করতে হয়।
চলার পথে কখনো না কখনো কিছু কিছু মুহূর্তে, কিছু কিছু ঘটনা ঘটে যায়.... যা হওয়ার নয় তাই হয়।
তখন জীবন ভাবে, যা হওয়ার নয় তা কেন হলো ?
জীবনের হিসাব হোক তা শূন্য,
হৃদয়টা তো হোক পূর্ণ!
শুধু ভালোবাসায় ভরে উঠুক জীবন।
দুই
জগৎময় জুড়ে মায়া যেন আজ কল্পকথা
কোন কিছুই তাকে স্পর্শ করে না
ঘাসফুলের মত মাড়িয়ে আর কত পথ যাবে?
যাবে তো একদিন,
ঘাসফুল তখন আর পথের উপর থাকবে না পড়ে।
সবকিছু একদিন শেষও হয়ে যাবে,
তবুও ছুটেছে এ প্রাণ তারই পিছু।
জীবনের পরতে পরতে মায়া !!
নাকি কেবল মরীচিকা ?
যা থাকে শুধু হৃদয়ে আঁকা!
তিন
দিন যায় রাত যায়
কত সময় যায় পেরিয়ে!
তবুও মেলে না দেখা
জমে শুধু নিরবতা।
নদীরা বাঁধন হারা আঁকা বাঁকা ছুটে যায়
তবু্ও জানি, সব নদী বয়ে এসে মিলবে একই মোহনায়।
মেঘেরা ছন্নছাড়া নীলিমায় ভেসে যায়
জল হয়ে তবুও ঝরবে বরষায়
এ নিয়তি বাধা, সে তো তোমারই আঙিনায়।
তাইতো, সব পথ মুছে দিয়ে যে পথ ধরে এসেছি
সে পথেই ফিরব,সে তো আমারই ঠিকানায়।
যেতে পথে এটুকুই বলি
যত দূরে যাই, জানি না তো কবে?
জেনে রেখ শুধু, ফের দেখা হবে।।
চার
ধূলি-মলিন বিবর্ণতার হয়েছে অবসান
শুষ্কতার দীনতা গেছে মুছে।
মেঘ মেদুর অম্বরে আগমন ঘটেছে
অরণ্যে অরণ্যে নতুন প্রাণের শিহরণ স্পর্শ বর্ষার।
সর্বত্রই যেন শ্যামল সবুজের দৃষ্টিনন্দন সমারোহ।
আকাশে দিগন্ত বিস্তার ধূসর কৃষ্ণ মেঘপুঞ্জ
মাঝে মাঝে বিদ্যুৎ স্ফুরণের নিদারুণ আলোর সাজ।
এরপর ঝরঝর বাদলের ধারা
আর সাথে কদম, কেয়া, কামিনী গন্ধরাজের মিষ্টি সুবাস।
স্নিগ্ধ কোমল প্রকৃতির চোখে কি নিদারুন মুগ্ধতার মায়াঞ্জন!! ????
পাঁচ
আর কতদিন বিষন্নতার কাঁটাতারে বিঁধে বয়ে নিয়ে বেড়াব,
কত দূর যাব আর!
পৃথিবীর আলো আজ নিভে গেছে, সবই অন্ধকার।
শুধু বেঁচে থাকার দুরূহ আকুতি!
ছোট্ট এক জীবের ধারালো থাবায়
সাহসটাও আজ হারিয়ে গেছে শূন্যের কোঠায়।
ঝরছে প্রাণ আর প্রাণ
এ যাত্রার শেষ কোথায়?
পারব কি পৃথিবীর নতুন সূর্যোদয়টা দেখার !