শুক্রবার   ২৯ মার্চ ২০২৪   চৈত্র ১৫ ১৪৩০   ১৯ রমজান ১৪৪৫

তরুণ কণ্ঠ|Torunkantho
৯১

সোনালী কাঠঠোকরা বাংলাদেশের বিরল আবাসিক পাখি

 শাহরিয়ার ইসলাম শ্রাবণ 

প্রকাশিত: ৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩  

এরা বাদাবন, চিরসবুজ বন ও উপকূলীয় ঝোঁপে বিচরণ করে। বাংলাদেশে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের বাইরে আর কোথাও পাওয়া যায়নি। খাবারের খোঁজে এরা পতিত কাঠের গুঁড়িতে লাফিয়ে লাফিয়ে পোকামাকড় খোঁজে। হাঁটেও লাফিয়ে লাফিয়ে। গাছের খাঁড়া কান্ডের বাকল জড়িয়ে ধরে তরতরিয়ে ওপরে উঠতে পারে। খাবারের তালিকায় আছে পিঁপড়া, উঁইপোকা ও পোকার লার্ভ....।গ্রামবাংলা অতি পরিচিত চেনা কাঠঠোকরা পাখি।গ্রামবাংলার কাঠঠোকরা বন, বাগান ও লোকালয়ে সর্বত্র বিচরণ করে, একাকী, জোড়ায় বা পারিবারিক দলে দেখা যায়। গাছের কান্ড ও ডালে হাতুড়ির মত আঘাত করে অথবা মাটিতে ঝরাপাতা উল্টে এরা খাবার সংগ্রহ করে। খাদ্যতালিকায় রয়েছে পিঁপড়া, শুয়োপোকা, বিছা, মাকড়শা, অন্যান্য পোকামাকড় এবং ফুল ও ফলের রস। শক্ত পা ও অনমনীয় লেজে ভর দিয়ে ছোট ছোট লাফ মেরে এরা গাছের কান্ড বেয়ে উপরে ওঠে, একটি গাছ থেকে অন্য ওড়ে যাওয়ার সময় উচ্চ স্বরে ডাকে- কিয়ি কিয়ি-কিয়ি-কিয়ি-কিয়িকিয়িয়িইরররর-র-র-র। ফেব্রুয়াারি- জুলাই মাসে প্রজনন ঋতুতে গাছের কান্ডে গর্ত খুঁড়ে বাসা বেঁধে এরা ডিম পাড়ে। ডিমগুলো সাদা, ৩টির বেশি ডিম পাড়েনা কাঠটোকরা। পুরুষ ও মেয়েপাখির উভয়ই বাসার সব কাজ করে। বাসায় হামলা হলে ছানারা সাপের মত হিসহিস শব্দ করে।
গ্রামবাংলা কাঠঠোকরা দেখতে খুবই সুন্দর সুলভ আবাসিক পাখি,আমরা চলার পথে সব বিভাগের সব বনে ও লোকালয়ে এ পাখি গুলো দেখতে পায়। বাংলা কাঠঠোকরা বিশ্বে ও বাংলাদেশে বিপদমুক্ত বলে বিবেচিত। বাংলাদেশ বন্যপ্রাণী আইনে এ প্রজাতি সংরক্ষিত।

বাংলা কাঠঠোকরার বৈজ্ঞানিক নামের অর্থ বাংলার বলীয়ান শক্তিমান। পাখিটি বাংলাদেশে শুধু কাঠঠোকরা নামে পরিচিত।

পাখিটি লম্বাতে ২৯ সেমি, ওজন ১০০ প্রাম মত হয়ে থাকে। প্রাপ্তবয়স্ক পাখির পিঠ সোনালী-হলুদ, দেহতলে কালো আইশের দাগ, ওড়ার পালক ও লেজ কালো, থুতনিতে কালো ডোরা, সাদা ঘাড়ের পাশে কালো দাগ, বুকে মোটা কালো আইশের দাগ, চোখে কালো ডোরা, ডানার গোঁড়ার ও মধ্য-পালক ঢাকনিতে সাদা বা ফিকে ফুটকি এবং পিঠ ও ডানার অবশেষ সোনালি। সবুজ গোলকসহ এর ঠোঁট লালচে-বাদামি, পা ও পায়ের পাতা ধূসর সবুজ এবং ঠোঁট শিঙ-রঙ এবং কালোর মিশ্রণ। ছেলে ও মেয়েপাখির চেহারায় পার্থক্য তাদের চাঁদি এবং ঝুটির রঙে, ছেলেপাখির চাঁদি ও ঝুটি উজ্জল লাল এবং মেয়েপাখির সাদা বিন্দুসহ চাঁদির সামনের অংশ কালো ও পিছনের ঝুটি লাল। তরুণ পাখির অনুজ্জল দেহ ও চাঁদির সামনের ভাগের সাদা বিন্দু ছাড়া দেখতে মেয়েপাখির মত। ৪টি উপপ্রজাতির কাঠঠোকরা বাংলাদেশে আছে।আমাদের গ্রামে সাধারণত দু-ধরণের কাঠঠোকরা পাখি বেশি দেখা যায় ।পুরুষটিকে দেখতে মুঘল আমলের রাজাদের মত মাথার উপরে স্বর্ণের মুকুট পড়া এ কাকটোকরা পাখি।আর মেয়ে পাখিটিকে দেখতে রাজ্যের প্রধান সেনাপতির মত।

এই বিভাগের আরো খবর