বৃহস্পতিবার   ২৮ মার্চ ২০২৪   চৈত্র ১৪ ১৪৩০   ১৮ রমজান ১৪৪৫

তরুণ কণ্ঠ|Torunkantho
২১৮

সুনামগঞ্জে সাংবাদিক নির্যাতনের পর উল্টো ফাঁসানোর চেষ্টা

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৯  

সুনামগঞ্জে নিরীহ এক সাংবাদিকের ওপর হামলা ও টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনায় মামলা দায়ের করার অপরাধে উল্টো মিথ্যা মামলা দিয়ে ফাঁসানোর চেষ্টা করছে সাংবাদিক নির্যাতনকারী সন্ত্রাসী ও চোরাকারবারী আব্দুর রাজ্জাক। সে জেলার তাহিরপুর উপজেলার উত্তরশ্রীপুর ইউনিয়নের ভারত সীমান্ত সংলগ্ন বালিয়াঘাট গ্রামের রাশিদ মিয়ার ছেলে।

আর নির্যাতত সাংবাদিক সাবজল হোসেন জেলার তাহিরপুর উপজেলার দুধেরআউটা গ্রামের পিয়ার আলীর ছেলে ও দৈনিক কালেরছবি পত্রিকার তাহিরপুর প্রতিনিধি। এরপর আজ ১৭.০২.১৯ইং রবিবার দুপুর ১টায় দায়েরকৃত ২টি মামলার তদন্ত করে ঘটনাস্থল থেকে আব্দুর রাজ্জাকে দায়েরকৃত মিথ্যা অভিযোগের কোন সত্যতা পাওয়া যায়নি। আর সাংবাদিক সাবজল হোসেনের ওপর হামলা ও টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনার প্রমান পাওয়াগেছে  বলে জানিয়েছে পুলিশ ও এলাকাবাসী।

জানাযায়,রাজ্জাকের চাঁদাবাজি ও মাদক ব্যবসার বিরুদ্ধে কথা বলায় গত শুক্রবার(১৫,০২,১৯)রাত ৭টায় আব্দুর রাজ্জাক তার ভাই আব্দুল কদ্দুস,শহিদ মিয়া,ভাতিজা রুবেল মিয়া,সোহাগ মিয়াগং দেশীয় অস্ত্র ও লাটিসুটা দিয়ে নতুন বাজারে সাংবাদিক সাবজল হোসেনের ওপর হামলা চালিয়ে আহত করে নগদ ৮হাজার ৭শত ৩০টাকা ছিনিয়ে নেয়। পরে এলাকাবাসী ওই সাংবাদিককে উদ্ধার করে স্থানীয় ভাবে চিকিৎসা দিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। এঘটনার প্রেক্ষিতে আহত সাংবাদিক সাবজল হোসেন বাদী হয়ে আব্দুর রাজ্জাকসহ মোট ৫জনকে আসামী করে ১৬.০২.১৯ইং শনিবার দুপুর ২টায় তাহিরপুর থানায় মামলা দায়ের করে।

এব্যাপারে বালিয়াঘাট,লালঘাট,টেকেরঘাট ও লাকমা গ্রামের কয়লা ও পাথর ব্যবসায়ী সাজু মিয়া,আসরব আলী,আসকর আলী,নয়ন মিয়া,ফারুক হোসেন,সুজন মিয়া, নুরুল আমিন মেম্বার,সিজিল মেম্মার,রাশেদ মেম্বারসহ আরো অনেকেই বলেন,আব্দুর রাজ্জাক নিজেকে অসংখ্য দৈনিক ও অনলাইন পত্রিকার সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে প্রতিদিন ভারত থেকে কয়লা,পাথর,মদ, গাঁজা,ইয়াবা ও অস্ত্র পাচাঁর করার পর পত্রিকার সম্পাদকদের নাম ভাংগিয়ে দীর্ঘদিন যাবত চাঁদাবাজি করছে।

দুদক তদন্ত করলে তার অবৈধ কয়েক কোটি টাকা ও সম্পদের সন্ধান পাবে। তার সোর্স কালাম মিয়া ইয়াবাসহ বিজিবির হাতে ধরা পড়ে জেলে যাওয়ার পর স্থানীয় সাংবাদিক,বিজিবি ও পুলিশের ওপর ক্ষেপে যায় আব্দুর রাজ্জাক। আর নিরীহ সাংবাদিক সাবজলের ওপর হামলা চালিয়ে নির্যাতন করে টাকা ছিনিয়ে নেয়।

থানা ও আদালত সূত্রে জানাযায়,বালিয়াঘাট গ্রামের গৃহবধু নাজমা বেগম চাঁদা না দেওয়ায় আব্দুর রাজ্জাক তার বাহিনী নিয়ে বাড়িঘর ভাংচুর ও লুটপাট করাসহ শারীরিক নির্যাতন করার ঘটনায় নাজমা বেগম বাদী হয়ে গত ০৮.০৫.২০১১ইং আদালতে আব্দুর রাজ্জাক,তার ভাই আব্দুল কদ্দুসসহ মোট ১৬জনের বিরুদ্ধে দঃবিঃ আইনের-৪৪৮/৩৮৫/৩৮০/ ৪২০/৪২৭/৩২৩/ ৩৫৪/৩৪ধারায় মামলা দায়ের করেন।

এছাড়া আব্দুর রাজ্জাক ও তার ভাই আব্দুল কুদ্দুসগং ভারত থেকে কয়লা ও মাদকদ্রব্য পাচাঁর করে নৌকা বোঝাই করার সময় নৌকা ও অবৈধ মালামালসহ আব্দুল কুদ্দুসকে বিজিবি গ্রেফতার করে এবং বালিয়াঘাট বিজিবি ক্যাম্প কমান্ডার আক্তারুজ্জামান বাদী হয়ে আব্দুর রাজ্জাক,তার ভাই আব্দুল কুদ্দুসগংদের বিরুদ্ধে তাহিরপুর থানায় মামলা নং-৯,তারিখ-১৭.০৯.০৭ইং(জিআর-৭২/০৭ইং)দায়ের করেন। এই মামলায় আব্দুর রাজ্জাক দীর্ঘদিন যাবত পলাতক ছিল এবং তার ভাই আব্দুল কুদ্দুসকে ৪বছরের কারাদন্ড দেয় নিন্ম আদালত। পরে হাইকোর্ট থেকে দুজন জামিন নেয়। বর্তমানে আদালতে মামলা নং-৬/২০০৮ইং হিসেবে চলমান রয়েছে।

এব্যাপারে নির্যাতিত সাংবাদিক সাবজল হোসেন বলেন, আমার ওপর হামলা করে টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনায় মামলা দায়ের করার কারণে আমার ও আমার পরিবারের লোকজনের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানী করার চেষ্টা করছে কয়লা চোরাচালান মামলার জামিনে থাকা আসামী চাঁদাবাজ আব্দুর রাজ্জাক। তাই সকল সাংবাদিক ও প্রশাসনের কাছে আমার নির্যাতনের বিচার চাই।

নির্যাতিত গৃহবধু নাজমা বেগম বলেন,আমি গরীব ও অসহায় বলে কি চোরাচালানী ও চাঁদাবাজ আব্দুর রাজ্জাকের নির্যাতনের বিচার পাব না। তাহিরপুর থানার এসআই নজরুল ইসলাম বলেন,ঘটনাস্থলে গিয়ে সাবজল হোসেনর ওপর হামলা ও ছিনতাইয়ের ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেছে আর আব্দুর রাজ্জাকের অভিযোগের কোন প্রমান পাওয়া যায়নি,এব্যাপারে শীগ্রই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তাহিরপুর থানার ওসি নন্দন কান্তি ধর এঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

এই বিভাগের আরো খবর