শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ৭ ১৪৩১   ১১ শাওয়াল ১৪৪৫

তরুণ কণ্ঠ|Torunkantho
২৩৮

রোহিঙ্গাদের জন্য আর এক ইঞ্চিও বনভূমি দেওয়া হবে না

তরুণ কণ্ঠ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৮ অক্টোবর ২০১৯  

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও ঢাকা-৯ আসনের সংসদ সদস্য সাবের হোসেন চৌধুরী বলেছেন, ‘রোহিঙ্গাদের কারণে বাংলাদেশের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। তবে বেশি ক্ষতি হয়েছে পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্যের, যা পূরণ করা সম্ভব নয়। রোহিঙ্গাদের কারণে বন গেছে, গাছ নেই, পশুপাখিসহ ধ্বংস হয়েছে  জীববৈচিত্র্য, ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে বন্যহাতি। এখন নতুন করে সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে পানি সংকট। প্রায় ১০ হাজার গভীর নলকূপ থেকে প্রতিদিন পানি তোলা হচ্ছে। ফলে পানির স্তর ক্রমান্বয়ে নিচে নামছে আর বিভিন্ন স্থানে দেখা দিয়েছে পানি সংকট। এ কারণে আগামীতে ভয়াবহ পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে। সবকিছু মিলে উখিয়া টেকনাফ এখন মরুভূমিতে পরিণত হচ্ছে। এমনিতে বড় ক্ষতি হয়েছে, তাই এখন নতুন করে আর কোনো হিসাব গুনতে  চাই না। রোহিঙ্গাদের জন্য আর এক ইঞ্চিও বনভূমি দেওয়া হবে না।’

আজ শুক্রবার একাদশ জাতীয় সংসদের ‘পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটি’র অষ্টম বৈঠক কক্সবাজার জেলা প্রশাসন কার্যালয়ের শহীদ জাফর আলম সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত হয়েছে। সংসদীয় কমিটির এ বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন সাবের হোসেন চৌধুরী এমপি।

রোহিঙ্গাদের জন্য পাহাড় কাটা নিয়ে সাবের হোসেন বলেন, ‘আর যারা পাহাড় কাটবে, তাদের রেহাই নেই। এনজিওরা পাহাড় কাটায় জড়িত থাকলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। জেলা প্রশাসকের নেতৃত্বে নিয়মিত মোবাইল কোর্ট পরিচালনা অব্যাহত থাকবে।’

যে পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে, তা পূরণ করা আসলে সম্ভব নয় উল্লেখ করে সাবের হোসেন চৌধুরী বলেন, ‘বন বিভাগের পাহাড় ধ্বংস করে যেভাবে বসতি স্থাপন করা হয়েছে, এ অবস্থায় বনায়ন করাও সম্ভব নয়। তারপরও কিছু বিশেষজ্ঞ দিয়ে ক্ষতির মাত্রা নির্ধারণ করে ভবিষ্যতের জন্য পরিকল্পিত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বাংলাদেশ সরকার প্রতিবছর এখানে ১০ হাজার কোটি টাকা ব্যয় করছে। বর্তমানে প্রায় আট হাজার একর বন ধ্বংস হয়ে গেছে। একই সঙ্গে জীববৈচিত্র্য ধ্বংস হয়ে গেছে।’

সংসদ সদস্য সাবের হোসেন বলেন, ‘রোহিঙ্গা ক্যাম্পে নির্দিষ্ট স্থানে ৬৩টি হাতি রয়েছে। এসব হাতির চারদিকে গড়ে উঠেছে রোহিঙ্গা বসতি। তাই হাতিগুলো বর্তমানে ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে এসব হাতি সুরক্ষার। বিভিন্ন স্থানে যাতায়াতের জন্য করিডোর করার পরিকল্পনা রয়েছে। অষ্টম সংসদীয় কমিটির সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে যে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে কী পরিমাণ পরিবেশের ওপর প্রভাব পড়েছে এবং ক্ষতি হয়েছে, তা নিরূপণের জন্য কমিটি গঠিত হয়েছে। কমিটি আগামী নভেম্বরে তার প্রতিবেদন উপস্থাপন করবে।’ 

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন বলেন, ‘সরকার পরিবেশ সুরক্ষার ওপর খুবই গুরুত্ব দিচ্ছে। পাহাড় কাটা ও বন ধ্বংসসহ নানাভাবে পরিবেশ নষ্ট করা হলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কক্সবাজারের সমুদ্রসৈকতের পরিবেশ সুরক্ষায় সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। পরিবেশ সুরক্ষা হলেই মানুষসহ সব প্রাণী সুরক্ষিত হবে।’

সংসদীয় স্থায়ী কমিটির অষ্টম বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন উপমন্ত্রী হাবিবুন নাহার, স্থায়ী কমিটির সদস্য জাফর আলম এমপি, রেজাউল করিম বাবলু এমপি, খোদেজা নাসরিন আক্তার হোসেন এমপি, জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন।

এ ছাড়া বৈঠকে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিব, অতিরিক্ত সচিব, উপসচিব, প্রধান বন সংরক্ষক, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক উপস্থিত ছিলেন।

এই বিভাগের আরো খবর