বৃহস্পতিবার   ২৮ মার্চ ২০২৪   চৈত্র ১৪ ১৪৩০   ১৮ রমজান ১৪৪৫

তরুণ কণ্ঠ|Torunkantho
৪৩১

যেসব পণ্যের দাম বাড়ছে, দাম কমছে

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৩ জুন ২০১৯  

জাতীয় সংসদে প্রস্তাবিত বাজেটে বেশকিছু পণ্য ও সেবায় বাড়তি কর আরোপের প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। এতে গাড়ির রেজিস্ট্রেশনের খরচসহ বিড়ি-সিগারেট, তেলসহ বেশকিছু পণ্য ও সেবার দাম বাড়তে পারে। অন্যদিকে, দেশীয় শিল্পের স্বার্থ রক্ষায় বেশকিছু খাতের ওপর শুল্ক কমানোর প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী। এতে রাইস ব্র্যান অয়েল, ফিচার ফোন, দেশে উৎপাদিত রেফ্রিজারেটরসহ বেশকিছু পণ্যের দাম কমবে।
অর্থমন্ত্রীর প্রস্তাবনা অনুযায়ী, যানজট নিরসনে গণপরিবহন ব্যবস্থার উন্নয়নের লক্ষ্যে যাত্রীবাহী বাস, পণ্যবাহী ট্রাক, লরি, থ্রি হুইলার, অ্যাম্বুলেন্স ও স্কুলবাস ছাড়া সব গাড়ির রেজিস্ট্রেশন, রুট পারমিট, ফিটনেস সনদ ও মালিকানা সনদ গ্রহণ ও নবায়নে নিয়মিত চার্জের ওপর ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপের প্রস্তাব করা হয়েছে। এতে গাড়ির রেজিস্ট্রেশনের খরচ বাড়বে।

এদিকে, চার্টার্ড বিমান ও হেলিকপ্টারে ২০ থেকে ২৫ শতাংশ শুল্ক নির্ধারণের প্রস্তাব করা হয়েছে। ৫ শতাংশ অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করা হয়েছে আইসক্রিমে। মোবাইল ফোনের সিম ও রিম কার্ডের ওপর শুল্ক ৫ থেকে ১০ শতাংশ করার প্রস্তাব করা হয়েছে।

বাজেট ব্ক্তৃতায় টিভি ও অনলাইনের মাধ্যমে অনুষ্ঠান সরবরাহকারী জ্যোতিষী ও ঘটকালি সেবার ওপর স্থানীয় পর্যায়ে এবং টেলিকম খাতে আমদানি পর্যায়ে ভ্যাট আরোপের প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী।

এছাড়া, সিগারেট, বিড়ি, জর্দা, গুলসহ সকল তামাক পণ্য, মোবাইল কল, এলপি গ্যাস, চিনি, আমদানি করা গুঁড়ো দুধ, গুঁড়া মসলা, টমেটো কেচাপ, চাটনি, ফলের জুস, টয়লেট টিস্যু, টিউবলাইট, চশমার ফ্রেম, সিআর কয়েল, জিআই তার, তারকাঁটা, স্ক্রু, ব্লেড, ট্রান্সফরমার, সানগ্লাস, রিডিং গ্লাস, আমদানি করা পার্টিকাল বোর্ড, আমদানি করা সব ধরনের টায়ার ও স্মার্টফোনের দামও বাড়ছে।

প্লাস্টিক ও অ্যালুমিনিয়ামের তৈজসপত্র, সয়াবিন তেল, পামঅয়েল, সানফ্লাওয়ার অয়েল ও সরিষার তেলের ওপর আমদানি পর্যায়ে ভ্যাট আরোপের প্রস্তাব করা হয়েছে। সিএনজি, বেবি ট্যাক্সি ও হালকা যানবাহনে ব্যবহৃত রাবার টিউবের ওপর শুল্ক ৩ শতাংশ থেকে ৫ শতাংশের প্রস্তাব করা হয়েছে।
সোনা ও রুপার অলংকার, ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল, লঞ্চের এসি কেবিন, ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট, ইনডেনটিং, আসবাবপত্র, পরিবহন ঠিকাদার, তথ্যপ্রযুক্তিনির্ভর সেবার ওপর খরচ বাড়বে। এছাড়া, বৈদ্যুতিক গৃহস্থালী পণ্যে আমদানি পর্যায়ে ২০ শতাংশ শুল্ক আরোপের প্রস্তাব করা হয়েছে। এতে এসব পণ্যের দাম বাড়বে।

দাম/খরচ কমছে যেসব পণ্যের

বাজেট বক্তৃতায় লিফট, স্থানীয় লিফট, রেফ্রিজারেটর, কমপ্রেশার, এয়ারকন্ডিশনার, মোটর, মোল্ড ও জুতা শিল্পের সুরক্ষায় আমদানি পর্যায়ে শুল্ক কমানোর প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী। এতে এসব শিল্প খাত থেকে উৎপাদিত পণ্যের দাম কমবে।

রাইস ব্র্যান অয়েল মিলের প্রধান কাঁচামাল ধানের কুঁড়া বা রাইসের সহজলভ্যতা নিশ্চিত করতে এর ওপর বিদ্যমান রফতানি শুল্ক ১০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ২৫ শতাংশের প্রস্তাব করা হয়েছে। ফলে কুঁড়া রফতানির প্রবণতা কমবে, দেশীয় রাইস ব্র্যান মিলগুলোতে কুঁড়ার সরবরাহ নিশ্চিত হবে। এতে রাইস ব্র্যান তেলের উৎপাদন বাড়বে।

দেশীয় শিল্পের স্বার্থে পরিবেশবান্ধব ইট রফতানিকে উৎসাহিত করতেও রফতানি শুল্ক ২৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১৫ শতাংশ করার প্রস্তাব রাখা হয়েছে। পাশপাশি হোটেল, হাসপাতাল, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকেও অগ্নি নির্বাপক যন্ত্র আমদানিতে রেয়াতি সুবিধা দেওয়ার প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী।

বাজেটে সেলুলার ফোন উৎপাদনে প্রয়োজনীয় যন্ত্রাংশ আমদানির ক্ষেত্রে শুল্ক কমানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। বর্তমানে আমদানি পর্যায়ে স্মার্টফোন ও ফিচার ফোনে ১০ শতাংশ শুল্ক রয়েছে। এর মধ্যে ফিচার ফোন নিম্ন আয়ের মানুষ বেশি ব্যবহার করে বলে এসব ফোনের আমদানি শুল্কে একই হার বহাল রাখা হয়েছে। তবে স্মার্টফোন উচ্চ আয়ের মানুষ বেশি ব্যবহার করে বলে স্মার্টফোনের আমদানি শুল্ক বাড়িয়ে ২৫ শতাংশ করার প্রস্তাব রাখা হয়েছে। এতে স্মার্টফোনের দাম বাড়বে।

এদিকে, সোনার চোরাচালান রোধে বাণিজ্যিকভাবে সোনা আমদানি করলে প্রতি ভরিতে (১১ দশমিক ৬৬৪ গ্রাম) শুল্ককর ৩ হাজার টাকা থেকে কমিয়ে ২ হাজার টাকা করা হয়েছে। ফলে সোনা আমদানিতে খরচ কমবে।

‘সমৃদ্ধ আগামীর পথযাত্রায় বাংলাদেশ: সময় এখন আমাদের, সময় এখন বাংলাদেশের’ শিরোনামে ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেট সংসদে পেশ করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। তবে বাজেট বক্তৃতার সময় অর্থমন্ত্রী অসুস্থ হয়ে পড়লে প্রধানমন্ত্রী তার পক্ষে বাজেট বক্তৃতা পাঠ করেন।

এই বিভাগের আরো খবর