শুক্রবার   ২৯ মার্চ ২০২৪   চৈত্র ১৫ ১৪৩০   ১৯ রমজান ১৪৪৫

তরুণ কণ্ঠ|Torunkantho
১৬২

মান্দায় জোরপূর্বক জমি দখল ও ২৩ দিন ধরে মার্কেট তালাবদ্ধ

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৯  

নওগাঁর মান্দায় জোরপূর্বক ৮ বিঘা জমি দখল ও একটি মার্কেট তালাবদ্ধ করে দিয়েছে প্রতিপক্ষরা। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার গনেশপুর ইউনিয়নের সাতবাড়িয়া মোড়ে।

মার্কেটটি তালাবদ্ধ থাকায় গত ২৩ দিন ধরে দোকানপাট খুলতে পারেননি ব্যবসায়িরা। দোকানের ভেতরে আটকে থাকা মালামাল নিয়েও উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন তারা। উপজেলার গনেশপুর ইউনিয়নের সাতবাড়িয়া মোড়ের এ ঘটনায় ব্যবসায়িদের মাঝে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে। 

মার্কেটের ব্যবসায়ি সাহাদৎ হোসেন জানান, সাতবাড়িয়া গ্রামের আব্দুল জব্বার ও বেলাল হোসেন গংরা দেড় বছর আগে নওগাঁ-রাজশাহী মহাসড়কের সাতবাড়িয়া মোড়ের অদুরে ৯ কক্ষবিশিষ্ট একটি মার্কেট নির্মাণ করেন। 

মার্কেটটি নির্মাণের পর এর দুটি কক্ষ ভাড়া নিয়ে আমি মিষ্টির ব্যবসা করে আসছি। দোকনের নাম দিয়েছি জাকির মিষ্টান্ন ভান্ডার। দুটি কক্ষের জন্য আমাকে জামানত দিতে হয়েছে ৮০ হাজার টাকা। প্রতি মাসে ভাড়া গুনতে হয় ১ হাজার টাকা। 

তিনি আরও বলেন, হঠাৎ করে গত ৪ ফেব্রæয়ারি জমির মালিকানা দাবি করে সাতবাড়িয়া গ্রামের মোজাম্মেল হক গংরা মার্কেটটি তালাবদ্ধ করে দেন। দোকানের ভেতরে থাকা মালামাল বের করতে দেয়া হয়নি। তালাবদ্ধ থাকায় ২০ দিন ধরে আমি দোকান খুলতে পারিনি। এতে করে দোকানের ভেতরে বিক্রির জন্য মজুদকৃত মিষ্টিসহ অন্যান্য মালামাল পচে নষ্ট হয়েছে বলেও তিনি দাবি করেন। 

মার্কেটের আরেক ব্যবসায়ি আকরাম হোসেন জানান, ওই মার্কেটে আমার ইলেকট্রনিক্সের দোকান রয়েছে। এ দোকানের আয়ে আমার সংসার চলে। দীর্ঘদিন দোকানঘরটি খুলতে না পারায় আমার আয়ের পথ বন্ধ হয়ে গেছে। দোকানের মালামাল বের করার সুযোগ দেয়া হলে সেগুলো অন্যত্র সরিয়ে ব্যবসা চালু রাখতে পারতাম। বর্তমান আমি চরম বেকাদায় পড়েছি। 

মার্কেটের মালিক বেলাল হোসেন জানান,আমাদের  পৈত্রিক সুত্রে পাওয়া ওই ৮ বিঘা ফসলি জমি, পকুর প্রতিপক্ষরা জোরপূর্বকদখলসহ মার্কেটটি প্রতিপক্ষের মোজাম্মেল হক, মকলেছুর রহমান গংরা স¤প্রতি তালাবদ্ধ করে দিয়েছে। এতে আমরা চরম ক্ষতির মুখে পড়েছি। তিনি আরও বলেন, জমিজমা নিয়ে প্রতিপক্ষের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে আমাদের বিরোধ চলে আসছে। এনিয়ে আদালতে একাধিক মামলা চলমান রয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি। 

জমির মালিকানা দাবিদার মকলেছুর রহমান জানান, দাদার ৫ ছেলের মধ্যে আমার বাবা খলিলুর রহমান সবার বড়। বাবা মারা গেলে ওয়ারিশসুত্রে আমরা ওই জমির মালিকানা লাভ করি। ওই জমির দখল নিয়ে একাধিকবার মারপিট, হামলা, ভাঙ্চুর ও বসতবাড়িতে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। মামলা ও গ্রেফতার আতঙ্কে আমরা সপরিবারে বসতবাড়ি ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নেই। এ সুযোগে প্রতিপক্ষরা ওই জমি দখল করে মার্কেট নির্মাণ করেছে।

এব্যাপারে গনেশপুর ইউ'পি চেয়ারম্যান হানিফ উদ্দিন মন্ডল বলেন,জমি সংক্রান্ত বিরোধে ভুক্তভোগীরা আমার কাছে লিখিত অভিযোগ করলে প্রতিপক্ষের লোকজনকে একাধিকবার নোটিশ প্রদান পূর্বক

ইউনিয়ন পরিষদে উপস্থিত হওয়ার জন্য বললেও তারা যথাসময়ে উপস্থিত না হওয়ায় তাদের জমি সংক্রান্ত বিরোধ মিমাংসা করা সম্ভব হয় নি। পরবর্তিতে তাদের আদালতের সরনাপন্ন হওয়ার জন্য পরামর্শ দেয়া হয়েছে।

মান্দা থানার কর্মকর্তা ইনচার্জ (ওসি) মোজাফফর হোসেন জানান, সাতবাড়িয়া মোড়ে একটি মার্কেট তালাবদ্ধ করার বিষয়ে আমি অবহিত হয়েছি। জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জের এ ঘটনা ঘটেছে বলে শুনেছি। তবে এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত থানায় কেউ অভিযোগ করেননি। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
 

এই বিভাগের আরো খবর