শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ৭ ১৪৩১   ১১ শাওয়াল ১৪৪৫

তরুণ কণ্ঠ|Torunkantho
১৭৩

মহাসংকটে বার্সেলোনা

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশিত: ২২ সেপ্টেম্বর ২০২১  

গত মৌসুম থেকেই ভুগছে বার্সা। গোলমুখে এলোমেলো অবস্থা, রক্ষণের দুর্বলতা, সেইসঙ্গে বেতন-ভাতা নিয়ে ক্লাবের সঙ্গে খেলোয়াড়দের অসন্তোষ- এমন হযবরল অবস্থা নতুন মৌসুমে আরও বাড়ল। তাতে মাঠ ও মাঠের বাইরেও তৈরি হয়েছে মহাসংকট। যে সংকট থেকে বেরিয়ে আসতে প্রেসিডেন্ট লাপোর্তে আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। যদিও বড় ধাক্কাটা আসে লিওনেল মেসি বার্সা ছেড়ে পিএসজিতে যাওয়ার পর। পারফরম্যান্সের গ্রাফটা দিনকে দিন নিচের দিকে যাচ্ছে। সেখান থেকে উত্তরণের জন্য কোচ বদলাতেও উঠেপড়ে লাগল লা লিগার অন্যতম ফেভারিটরা।

গোল করবে কে

মেসি থাকাকালেই ম্যানচেস্টার সিটি থেকে সার্জিও আগুয়েরো, লিগ ওয়ানের ক্লাব লিঁও থেকে দেপাইকে কিনেছিল গোললাইন সচল রাখার জন্য। তাদের কেনার পর লা লিগার ফিন্যান্সিয়াল পলিসির মারপ্যাঁচে পড়ে আরও খাদে পড়ে দলটি। তাদের রেজিস্ট্রেশন করানো নিয়ে অনেক বাধা অতিক্রম করতে হয়। দেরিতে হলেও সেই প্রক্রিয়া শেষ করে বার্সা। কিন্তু মূল আসর শুরুর আগেই চোটে পড়েন আগুয়েরো। তাতে দলটির দুশ্চিন্তা আবার বাড়ে। গত কয়েক ম্যাচে জোড়াতালি দিয়ে আক্রমণভাগ সাজাচ্ছে দলটি। যার মাশুলও গুনতে হচ্ছে তাদের। গোলমুখে একাধিক সুযোগ তৈরি করেও মিলছে না গোল। সর্বশেষ গ্রানাদার বিপক্ষে ১-১ গোলে ড্র করেছে তারা। চার ম্যাচের মধ্যে দেপাই আর ব্রাথওয়েটের গোল ছাড়া বাকি সময় বার্সাকে উদ্ধার করেছিল হয় মিডফিল্ডার না হয় ডিফেন্ডার। অথচ তাদের স্ট্রাইকারের লিস্ট অনেক লম্বা।

রক্ষণে আগের অবস্থা

রক্ষণভাগের অচলাবস্থা অনেক পুরোনো। গেল চার-পাঁচ মৌসুমে সেটা হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছে বার্সা। সেজন্য প্রতিবারই আক্রমণভাগের সঙ্গে রক্ষণের দু-একজন করে খেলোয়াড় যোগ করেন তারা। তবু চেহারাটা আগের মতোই। পিকে-লেংলেটরা বার্সাকে সেভাবে সার্ভিস দিতে পারছে না। যা নিয়ে নিয়মিত সমালোচনাও হচ্ছে। তার মধ্যে ইনজুরিতে জর্ডি আলবা, মুসা ওয়াগে। তবে বর্তমান রক্ষণভাগের মধ্যে অস্কার মিঙ্গুয়েজাকে নিয়ে বার্সার স্বস্তি থাকতে পারে। রেটিংয়ের দিক থেকে তিনিই বর্তমানে এগিয়ে। কিন্তু জমাট রক্ষণ বলতে যা বোঝানো হয়, তার একভাগও নেই বার্সার এই দলে।

ইনজুরিতে সাত খেলোয়াড়

মেসির জার্সিটা আনসু ফাতির হাতে তুলে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ফাতি এখনও দশ নম্বর জার্সি পরে নামতেই পারলেন না। ফিটনেস সমস্যায় ভুগছেন এই তরুণ ফরোয়ার্ড। সেইসঙ্গে আগুয়েরোও ফিরতে পারেন অক্টোবরের মাঝামাঝিতে। ২০২০-২১ মৌসুমের শেষ দিকে ঝলক দেখানো ওসমান ডেম্বেলে ভুগছেন হ্যামস্ট্রিংয়ের চোটে। তার ফিরতে ফিরতেও অক্টোরের ২০ বা ২১ তারিখ হয়ে যাবে। ইউরোতে স্পেনের হয়ে আলো ছড়ানো সেন্টার মিডফিল্ডার পেদ্রিও দর্শকের সারিতে আছেন। পেশির ইনজুরির কারণে এ মাসের শেষ দিক ছাড়া তার নামার উপায় নেই। সব মিলিয়ে বার্সার স্কোয়াডের সাতজন খেলোয়াড়ই এখন চোটের সঙ্গে লড়াই করছেন।

নেই পয়েন্ট টেবিলের পাঁচে

সেরাদের একটি বার্সা! কিন্তু তাদের অবস্থা বেশ শোচনীয়। একেবারে বাজে খেলছে, তাও নয়। প্রতি ম্যাচেই গোলের সুযোগ তৈরি করছে অহরহ। প্রতিপক্ষের গোলমুখে ভয় ধরাচ্ছে; কিন্তু জালটা খুঁজে পাচ্ছে না। সোমবার রাতে গ্রানাদার বিপক্ষে দুই মিনিটের মধ্যে গোল খাওয়ার পর ৯০তম মিনিটে আরাজোর গোলে সমতায় ফেরে। যে ম্যাচে সব মিলিয়ে ৫৪টি ক্রস দিয়েছিল বার্সার খেলোয়াড়রা। যেটা ২০০৫-০৬ মৌসুমের পর এক ম্যাচে সর্বোচ্চ। তবু গোল একাধিক করতে পারেনি তারা। এমন হতশ্রী অবস্থার কারণে পয়েন্ট টেবিলেও তলানির দিকে পড়ে যাচ্ছে দলটি। বর্তমানে ৪ ম্যাচ থেকে ৮ পয়েন্ট তুলেছে তারা। তাতে পয়েন্ট টেবিলে বার্সার অবস্থান সাত নম্বরে।

কোম্যানের সময় ঘনিয়ে আসছে

ঘনঘন কোচ বদলে যেন হাঁফিয়ে উঠেছে বার্সা। তাই এবার সময় নিয়েই কোচ খুঁজছে তারা। সেই জুলাই থেকেই নাকি নতুন কাউকে বসাতে চাচ্ছে দলটি। যেমনটা সম্প্রতি বার্সার কোচ রোনাল্ড কোম্যানও বলেছিলেন। তবে দিন যত যাচ্ছে, তত বাড়ছে বার্সার হতাশা। সেইসঙ্গে কোম্যানের সময়ও ঘনিয়ে আসছে। মঙ্গলবার স্প্যানিশ দৈনিকগুলো জানিয়েছে, গ্রানাদার বিপক্ষে ড্র করায় আরও বেশি আপসেট প্রেসিডেন্ট লাপোর্তে। তাই যত দ্রুত সম্ভব কোম্যানের জায়গায় নতুন কাউকে চান তিনি। তালিকায় আছেন বেলজিয়ামের কোচ রর্বেতো মার্টিনেজ, জার্মানির সাবেক কোচ জোয়াকিম লো এবং জাভি হার্নান্দেজ। এ ছাড়া জুভেন্তাস থেকে বাদ পড়া আন্দ্রে পিরলোর কথাও শোনা যাচ্ছে।

এই বিভাগের আরো খবর