বৃহস্পতিবার   ১৮ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ৫ ১৪৩১   ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

তরুণ কণ্ঠ|Torunkantho
৭৩৬

ভোরে ঘুম থেকে উঠার সুফল

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশিত: ২৮ জুলাই ২০১৯  

ছোটবেলা থেকে এ কথাটা আমরা প্রায়ই শুনি। কিন্ত ঘুম থেকে ওঠার সময় চোখটা কিছুতেই খুলতে চায় না! যার পিছনে রয়েছে কর্মজীবনের বিভিন্ন শিফট, ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম সময় দেওয়া কিংবা ওয়েব সিরিজের হাতছানির মতো বিভিন্ন কারণ। এদিকে দেরিতে উঠলে শুধুমাত্র যে সারাদিনের কাজের এনার্জি চলে যাচ্ছে তাই নয়, মস্তিষ্ক ঠিক মতো সচল থাকার জন্য পরিমিত ঘুমেরও অভাব হচ্ছে। তাই সারাদিন কায়িক পরিশ্রম করতে সকালে তাড়াতাড়ি ওঠার অভ্যাস করুন। তবে কি ভাবে তাড়াতাড়ি উঠবেন তা কিন্তু ঠিক করতে হবে আপনাকেই।

কেন উঠবেনঃ ভোরবেলা আমাদের মস্তিষ্ক সবচেয়ে বেশি সচল থাকে। সকালে যে কোনও কাজে ভাল করে মনঃসংযোগও দেওয়া যায়। শারীরিকভাবেও ফিটনেস বজায় থাকে। তাছাড়া তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে উঠলে অন্যান্য কাজের জন্য হাতে সময় থাকে বেশি। এর ফলে আপনি খুব শান্তিপূর্ণভাবে নিজের কাজ সম্পর্কে চিন্তা ভাবনা করতে পারেন।

রাতে ভাল করে ঘুমানোর পর ভোরে আমাদের এনার্জি পুরো দিনের ও রাতের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ থাকে। যদি দেরি করে ঘুম থেকে ওঠেন তবে লক্ষ করে দেখবেন আপনি ভিতরে ভিতরে অনেক দুর্বলতা অনুভব করবেন। এই দুর্বলতা আপনার কাজের গতি অনেকাংশে কমিয়ে দেবে।
অনেকদিন ধরে সপ্তাহান্তের জন্য ঘরে নানা কাজ জমিয়ে রেখেছেন? কিন্তু একবার ভেবে দেখেছেন কি ৬ দিনের জমিয়ে রাখা কাজ এক সঙ্গে ১টি দিনে করা কতটা কঠিন এবং সময় সাপেক্ষ ব্যাপার। এর চাইতে দিনের কাজ দিনে অনেক সহজে করে ফেলা যায়। পরিবর্তে ছুটির দিন খানিকটা সময় পাওয়া যায় যা অন্য কাজে লাগাতে পারেন কিংবা বিশ্রামও নিতে পারেন। তাই ভোরবেলা ঘুম থেকে উঠে নিজের কাজগুলি সেরে ফেলুন।
 
ভোরবেলা ঘুম থেকে উঠলে পুরোদিনের কাজের একটি সময়সূচি তৈরি করে ফেলা যায়। আপনি যখন সকালে দেরিতে ঘুম থেকে ওঠেন তখন আপনার হাতে সময় কম থাকে বলে তাড়াহুড়োয় গুছিয়ে কাজ করা হয়ে উঠে না। ফলে পুরো দিনটিই কেমন যেন এলোমেলো হয়ে যায়। কিন্তু ভোরে ঘুম থেকে উঠে যখন আপনার হাতে সময় থাকে তখন ঠান্ডা মাথায় ভেবে পুরোদিনের সময়সূচি তৈরি করে ফেলতে পারেন। দিনের প্রতিটি মুহূর্ত কাজে লাগাতে পারেন। ফলে কাজে সফলতা আসার সম্ভাবনা অনেকাংশে বেড়ে যায়। আপনি কি লক্ষ করেছেন যে সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠলে আপনি রাতে তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পড়েন এবং যেহেতু সারাদিন অনেক ব্যস্ততার মধ্য দিয়ে যাবেন সুতরাং ঘুমটাও বেশ ভাল হবে। আর রাতে ভাল ঘুম হলে সারাদিন কাজে এনার্জিও পাওয়া যাবে। শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বজায় রাখতেও রাতের পরিমিত ঘুম জরুরি।

কীভাবে সকালে ওঠা অভ্যাস করবেনঃ কথায় বলে, মানুষ অভ্যাসের দাস। কোনও মানুষ চাইলেই তার অভ্যাস পরিবর্তন করতে পারে। ঠিক তেমনি দেরিতে ঘুম থেকে ওঠার অভ্যাসও যে কেউ চাইলেই পরিবর্তন করতে পারে। এর জন্য তাকে প্রাত্যহিক জীবনে কিছু পরিবর্তন আনতে হবে। তবে সবচেয়ে ভাল হয় যদি ছোটবেলা থেকেই তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে ওঠার অভ্যাস করা যায়। একজন মানুষের স্বাভাবিকভাবে ৬-৮ ঘণ্টা ঘুমানো উচিত। আর সকালে ঘুম থেকে ওঠার অভ্যাস পরিবর্তনটা খুব কঠিন কিছু না। কিছু নিয়ম অবলম্বন করলেই সকালে ঘুম থেকে ওঠা যায়। যেমন-

আপনি যখন ঘুম থেকে উঠবেন বলে ঠিক করবেন ঠিক তার থেকে অন্তত ৭ ঘন্টা আগে ঘুমোতে যান।
ঘুমানোর এক ঘন্টা আগে মোবাইল, টিভি, ল্যাপটপ ব্যবহার করবেন না।
রাতে হালকা ডিনার করুন। ঘুমানোর অন্তত এক ঘন্টা আগে রাতের খাবার খান এবং তারপরে হাঁটাহাঁটি অথবা একটু ব্যায়াম করে নিতে পারেন। এতে খাবার সহজে হজম হবে। যারা বাড়িতে থাকেন তারা দুপুরে অনেকক্ষণ ঘুমানোর অভ্যাস ত্যাগ করুন। পরদিন কী কী কাজ করা হবে, সেটা ঘুমাতে যাওয়ার অনেক আগেই ঠিক করে নিন।

ঘুমানোর সময় ঠিক রাখুনঃ সকালে তাড়াতাড়ি ওঠার জন্য কোনও মতেই ঘুমের সময়ের সঙ্গে আপস করলে চলবে না। অর্থাৎ রাত ২টোয় ঘুমিয়ে ৫ টায় উঠে পড়লে চলবে না। ৬-৭ ঘণ্টা অবশ্যই ঘুমাতে হবে। পাশাপাশি রোজ একই সময়ে ঘুমানোর চেষ্টা করুন। এতে ঘুম সহজে আসবে এবং আপনি তাড়াতাড়ি উঠতেও পারবেন।