বৃহস্পতিবার   ২৮ মার্চ ২০২৪   চৈত্র ১৪ ১৪৩০   ১৮ রমজান ১৪৪৫

তরুণ কণ্ঠ|Torunkantho
৪৭৩

ভাষা আন্দোলন ও প্রাক কথন

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৯  

শ্রোদ্ধার সাথে স্মরণ করছি সেই ভাষা শহীদ ও সৈনিকদের যাদের আত্মত্যাগে অর্জিত আমাদের মাতৃভাষা বাংলা।যা বিশ্বপটে অবিস্মরণীয় ইতিহাস।

আমরা বাঙালী,আমাদের মাতৃভাষা বাংলা।এই বাংলা মায়ের ভাষাকে মায়ের কোলে ফেরাতে আছে সুদীর্ঘ রক্তক্ষয়ী ইতিহাস।বিশ্ব দরবারে ভাষার জন্য রক্ত-জীবন দাতা অন্য কোন দেশ খুঁজে পাওয়া দূরহ! ভাষা আন্দোলনের জন্য আজও ভূ-প্রশংসীত বাংলাদেশ।

বাংলা ভাষা আন্দোলন ছিল তদানীন্তন পূর্ব পাকিস্তান সংঘটিত একটি সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক আন্দোলন।১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারিতে এ আন্দোলন চূড়ান্ত রূপ ধারণ করলেও,এর বীজ রোপিত হয়েছিল বহু আগে এবং  প্রতিক্রিয়া-ফলাফল ছিল সুদূরপ্রসারী।

১৯৪৭ সালের ১৪-১৫ আগস্ট দ্বি-জাতিও তত্ত্বের উপর ভিত্তি করে ব্রিটিশ ভারত ভেঙে পাকিস্তান অধিরাজ্য ও ভারত অধিরাজ্য নামে দুটি সার্বভৌম রাষ্ট্র গঠন করা হয়।এর পূর্বে ১৯৪০ সালের ২৩ মার্চ শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হক কর্তৃক উত্থাপিত "লাহোর প্রস্তাব"-এর আলোকে ব্রিটিশ ভারতে রাষ্ট্র ভাষা বাংলার দাবি করেছিলেন তৎকালীন সচেতন বুদ্ধিজীবি ও সাহিত্যিকগন।কিন্তুু ১৯৪৬ সালে ৯ এপ্রিল লাহোর প্রস্তাবকে সংশোধনের সাথে রাষ্ট্র ভাষা বাংলার দাবি  ক্রমশ হ্রস পেতে শুরু করে।

লাহোর প্রস্তাব গৃহীত হওয়ার পূর্বে ভারতের অন্যতম রাজনৈতিক দল কংগ্রেস ভারতের রাষ্ট্র ভাষা হিন্দি করার প্রচেষ্টা শুরু করে।অপরদিকে,মুসলিম লীগ উর্দূকে রাষ্ট্র ভাষার যৌক্তিক দাবি জানান।দু'পক্ষের শক্ত দাবিতে হুজুগের স্রোতে রাষ্ট্রীয় ভাষা বাংলার দাবি ভেসে যায়।

প্রফুল্ল বাবু এসব উদাসিনতার স্মৃতিচারণ করে বলেন,....বাঙালীরা তীর্থ ভারতীয় ব্যাপারে আজ-কাল উদাসীন,সুতারং নিজেদের দাবী পেশ করিতে তাহারা অক্ষম।

মহাত্মা গান্ধী ভারতের রাষ্ট্র ভাষা হিন্দুস্থানী প্রস্তাব  করে বলেন,এহা আরবি বর্ণমালায় লেখলে হবে উর্দূ এবং দেবনাগরী ভাষায় লেখলে হবে হিন্দি।যদিও সুবিধাজনক না হওয়ার মত পাল্টিয়ে ভারতের রাষ্ট্র ভাষা হিন্দি করার প্রচেষ্ঠা চালাতে থাকেন।মহাত্মা গান্ধীর রহস্যভেদ  এবং হিন্দুস্থানীর সাথে মুসলিম ইতিহাস,ঐতিয্য ও সংস্কৃতির অসাম্য হওয়ার তারা(উর্দূপন্থী) প্রত্যাক্ষান করে।

১৯৪৭ সালে ভারত বিভক্তির পূর্বে ভারত অধিরাজ্যের রাষ্ট্র ভাষা মোটামুটি ভাবে হিন্দি ধরা হলেও পাকিস্তান অধিরাজ্যের রাষ্ট্র ভাষা কি হবে তা ঠিক না করে ভারত বিভক্ত করা হয়।বিভক্তিতে বাংলাদেশ পাকিস্তানের অনুকুলে আসে।ভারত বিভক্তের পর পাকিস্তান অধিরাজ্যের রাষ্ট্রভাষা প্রশ্নে আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্ত না হওয়া এবং মোট জনসংখ্যার ৫৬% বাংলা   এবং ৪৪%  উর্দু ও অন্যান্য ভাষাভাষী হওয়া সত্ত্বেও উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা করার লক্ষ্যে পাকিস্তানের উচ্চপদস্থ সরকারী কর্মকর্তারা গোপন প্রচেষ্টা শুরু করে।

তৎকালীন সময় থেকে পাকিস্তান প্রধানত পূর্ব পাকিস্তান(বর্তমান বাংলাদেশ) ও পশ্চিম পাকিস্তান হিসাবেই পরিচিত।
রাষ্ট্র ভাষা নিয়ে পাকিস্তানের গোপন ষড়যন্ত্র ও হঠকারী সিদ্ধান্তে বিস্মিত ও ক্ষুব্ধ হয়ে প্রতিবাদ ও প্রতিরোধ শুরু করে বাংলাভাষা প্রেমীরা।

১৯৪৭ সালের ১সেপ্টেম্বরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক আবুল কাসেম উদ্যগে কিছু অধ্যাপকের সমন্বয়ে ঢাকায় তমদ্দুন মজলিস প্রতিষ্ঠিত হয়।পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পর প্রথম সক্রিয় ও সংগঠনিক ভাবে রাষ্ট্র ভাষা বাংলার আন্দোলন শুরু করে"তমদ্দুন মজলিস "। যদিও এর আগে রেঁনেসা সোসাইটি  ও সাহিত্য সংসদ নামে দু'টি সাংষ্কৃতিক সংগঠন বাংলা ভাষা পক্ষে কথা বলত,তবে তেমন সাড়া ফেলতে পারেনি।

তমদ্দুন মজলিস ইসলামীক আদর্শে প্রভাবিত একটি আধা-রাজনৈতিক ও আধা-সাংস্কৃতিক সংগঠন।পাকিস্তান নামক নতুন রাষ্ট্রের মানুষের ইসলামিক চেতনা শক্তিশালী করার মুল উদ্দেশ্য হলেও বাংলা ভাষা আন্দোলনে সংগঠনটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

তমদ্দুন মজলিস ১৯৪৭ সালের ১৫ সেপ্টেম্বরে কাজী মোতাহার হোসেন, আবুল মনসুর আহমেদ এবং অধ্যাপক আবুল কাসেম রচিত"পাকিস্তানের রাষ্ট্র ভাষা বাংলা না উর্দু"? নামে একটি পুস্তিকা প্রকাশ করে যা বাংলা ভাষা প্রতিষ্ঠা করার পক্ষে জোরালো মতামত তুলে ধরেন।

ভাষা আন্দোলনকে সোচ্চার করতে তমদ্দুন মজলিসের নেতৃত্বে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক নূরুল হক ভূঁইয়াকে প্রধান সমন্বয়ক নির্বাচিত করে ১৯৪৭ সালের অক্টোবর মাসে প্রথম ‘’প্রথম রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ’’ গঠিত হয়।

১৯৪৭সালের ৫নভেম্বর কারাচিতে শিল্পী জয়নুল আবেদিনকে অভ্যর্থনা জানানোর জন্য একটি শিক্ষা সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।এসময়,দেশের সংবাদিক,বুদ্ধিজীবি,অধ্যাপক ও বিশেষ ব্যক্তিবর্গ রাষ্ট্রভাষা বাংলার স্বপক্ষে বক্তব্য রাখেন এবং সর্বসম্মতিক্রমে রাষ্ট্রভাষা বাংলা গৃহিত হয়।কিন্তুু ক্ষমতাসীন দল গৃহিত সিদ্ধান্তকে খন্ডন করে প্রচার করে যে,শিক্ষা সমাবেশ উর্দূ পাকিস্তানে রাষ্ট্র ভাষা হিসাবে গৃহিত হয়েছে।এই প্রচারণায় পূর্ব পাকিস্তানের ছাত্র,শিক্ষক ও সচেতন মহলে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়।

একপাক্ষি সিদ্ধান্ত নেয়ার প্রতিবাদে ১৯৪৭ সালের ৬ ডিসেম্বরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে ‘’প্রথম রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ’’-এর আহ্বানে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।আর এটা ভাষা আন্দোলনে ছাত্রদের প্রথম বিক্ষোভ সমাবেশ।সভা শেষে ছাত্ররা একটি মিছিল নিয়ে নাজিমুদ্দিন,নুরুল আমিনসহ তৎকালীন বিশেষ ব্যক্তিদের নিকট রাষ্ট্র ভাষা বাংলার দাবি জানান এবং তারা আসস্থ করেন।

রাষ্ট্রভাষা নিয়ে ক্রমশ উত্তপ্ত বৃদ্ধি পায় এবং সংঘর্ষ ঘটতে থাকে....।১২ডিসেম্বর পলাশী ব্যারাকে বাংলা ও উর্দূ সমর্থকদের মাঝে সংঘর্ষ হয়,গুন্ডাদের আক্রমনে ২০জন আহত ও ২জন নিহত হয়।আক্রমণেরর প্রতিবাদে ১৩ডিসেম্বর ছাত্র ও সেক্রেটারিয়েট ধর্ম ঘট করে।পরিস্থিতি আয়ত্তে আনার জন্য ১৫দিনের জন্য ঢাকায় ১৪৪ধারা জারি করা হয়।

১৯৪৮সালে পাকিস্তানের গনপরিষদ অধিবেশনে ধীরেন্দ্রনাথ রাষ্ট্র ভাষা বাংলার দাবিতে বিল পেশ করেন কিন্তুু তা অগ্রায্য হয়।অধিবেশনে এভাবে অগ্রায্য করায় পূর্ব পাকিস্তানে ধর্মঘট,প্রতিবাদ সভা-সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

১৯৪৮ সালে ২ মার্চ এক যৌথসভা রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ সম্প্রসারণ করে প্রথম সর্বদলীয় সংগ্রাম পরিষদ গঠিত হয়।সভায় ৭মার্চ ঢাকায় এবং ১১মার্চ সাড়া দেশে ধর্মঘটের সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়।ভাষা আন্দোলনের ইতিহাসে ১১মার্চ'৪৮ একটি ঘটনা প্রবাহ দিন।১১মার্চ'৪৮ আন্দোলনে সরকারকে রাষ্ট্রভাষা বাংলার স্বপক্ষে স্বাক্ষরে (১৫মার্চ স্বাক্ষর করে) বাধ্য করা হয়েছিলো।এদিন ভাষা আন্দোলনকারীরা গ্রুপভিত্তিক পিকেটিং শুরু করে ঘটনাস্থলে মাহবুব,শেখ মজিবুর ও গোলাম আযমসহ উল্লেখযোগ্য ব্যক্তি গ্রেফতার হন এবং এ,কে ফজলু্ল হকসহ অর্ধশতাধিক আহত হন।ছাত্রদের উপর অমানুষিক নির্যাতন ও গ্রেপ্তারে পূর্ব পাকিস্তানে প্রতিবাদসহ ১২,১৩ এবং ১৪ মার্চ সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ধর্মঘট পালিত হয়।

১১মার্চ'৪৮-এ ভাষা আন্দোলনের তীব্রতা ও জিন্নাহ'র ঢাকা সফর নিয়ে প্রশাসনিক সরকার নাজিমুদ্দীন সর্বদলীয় সংগ্রাম পরিষদ নেতাদের আলোচনায় বসতে আমন্ত্রণ জানায়।১৫মার্চ আলোচনায় সাত দফা সম্বলিত চুক্তিতে তর্ক-বিতর্কে তা সম্পাদিত হয়।

১৯মার্চ ১৯৪৮ মুহাম্মদ আলী জিন্নাহ ঢাকা সফরে আসেন।২১মার্চ রেসকোর্স ময়দান ২৪মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে উর্দূ পাকিস্তানে একমাত্র রাষ্ট্র ভাষা তুলে ধরে বক্তৃতা দেন।তার এই বক্তব্যে ছাত্র-শিক্ষকসহ সর্বস্তরের মানুষ বিস্মিত ও ক্ষুব্ধ হয় এবং না-না ধ্বনিতে প্রতিবাদ শুরু করে।মূলত, তার এই বক্তব্য প্রশাসনিক সরকারের ইন্ধনে দিয়েছেন বলে স্বীকার করেছেন তিনি......।

২৬জানুয়ারী'৫০ পল্টনে চুক্তিভঙ্গ করে নাজিমুদ্দিন ঘোষনা দেন যে,পাকিস্তানের একমাত্র ভাষা-উর্দূ! প্রতিবাদে ৩০জানুয়ারি ধর্মঘট পালিত হয়।

নাজিমুদ্দিনের ঘোষনার প্রেক্ষিতে ৩০ফেব্রুয়ারী ১৯৫২ সর্বদলীয় রাষ্ট্রভাষা কর্মপরিষদ গঠিত হয় এবং ৪ফেব্রুয়ারী ঢাকার সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী বিক্ষভ মিছিল বের করে বিশ্ববিদ্যালয় মাঠে মিলিত হয়।এসময় রাষ্ট্রভাষা বাংলা সুপ্রতিষ্ঠ না হওয়া পর্যন্ত অবিরাম আন্দোলন বহমান থাকার সিদ্ধান্ত ও ২১ফেব্রুয়ারী সাড়া দেশে ধর্মঘট পালনোর ঘোষনা করা হয়।

প্রশাসনিক বাজেট উপলক্ষে ২০ফেব্রুয়ারী'৫২ থেকে এক মাস ধর্মঘট,শোভাযাত্রা নিষিদ্ধ ও ১৪৪ধারা জারি হয়।আন্দোলনের কর্মসূচী হিসাবে সর্বদলীয় রাষ্ট্রভাষা কর্মপরিষদ বৈঠক বসে।বৈঠকে ১৪৪ধারা ভাঙ্গা নিয়ে দ্বি-মত থাকলেও অধিকাংশ নেতৃবৃন্দ ১৪৪ধারা ভঙ্গে আন্দোলন চালিয়ে যেতে মত ব্যক্ত করেন।

২১শে ফেব্রুয়ারী ১৪৪ধারা উপেক্ষা করে প্রতূষেই সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের আমতলাতে মিলিত হতে শুরু করে, ক্ষনিকেই জনস্রোতে পরিনত হয়।বেলা ১২:৩০দিকে গাজিউল হকের সভাপত্বিতে শুরু হয় সর্বদলীয় রাষ্ট্রভাষা কর্মপরিষদের সমাবেশ।

সমাবেশে ১৪৪ধারা ভঙ্গ/না ভঙ্গের উপর অনেকেই বক্তৃতা দেন।কিন্তুু বিশ্ববিদ্যালয় রাষ্ট্রভাষা কমিটির আহ্বায়ক আব্দুল মতিন আন্দোলনের পটভূমি ব্যাখ্যা করে ১৪৪ধারা ভঙ্গের সিদ্ধান্ত শিক্ষার্থীদের উপর ছেড়ে দেন এবং শিক্ষার্থীরা নানান স্লোগানে তা ভঙ্গ করে আন্দোলনে যেতে প্রস্তুতি গ্রহন করেন।

বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকেই আন্দোলন প্রতিহত করার জন্য প্রচেষ্টা করে প্রশাসন কিন্তুু সহস্র বাধা ডিঙ্গিয়ে এগোতে থাকে বাংলাপ্রেমী ছাত্রজনতার মিছিল।

মিছিলটি ঢাকা মেডিকেল কলেজের কাছাকাছি এলে পুলিশ ১৪৪ ধারা অবমাননার অজুহাতে আন্দোলনকারীদের ওপর ক্যাঁদানে গ্যাস,লাটিচার্জ ও গুলিবর্ষণ শুরু করে।নিহত হন  রফিক,সালাউদ্দিন, সালাম, বরকত ও আব্দুল জব্বারসহ অনেকে। এছাড়া ১৭ জন ছাত্র-যুবক আহত হয়।

২১ ফেব্রুয়ারির ছাত্র হত্যার প্রতিবাদে সারাদেশে ২২ ও ২৩ ফেব্রুয়ারি ছাত্র, শ্রমিক, সাহিত্যিক, বুদ্ধিজীবী, শিক্ষক ও সাধারণ জনতা পূর্ণ হরতাল পালন করে এবং সভা-শোভাযাত্রাসহকারে ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে। ২২ ফেব্রুয়ারি ফের পুলিশের গুলিতে শহীদ হন শফিউর রহমান শফিক, রিক্সাচালক আউয়াল এবং এক কিশোর। ২৩ ফেব্রুয়ারি ফুলবাড়িয়ায় ছাত্র-জনতার মিছিলেও পুলিশ অত্যাচার-নিপীড়ন চালায়।

ভাষা আন্দোলনের শহীদ স্মৃতিকে অম্লান করে রাখার জন্য মেডিকেল কলেজ হোস্টেল প্রাঙ্গনে রাতারাতি ছাত্রদের দ্বারা গড়ে ওঠে শহীদ মিনার, যা ২৪ ফেব্রুয়ারি উদ্বোধন করেন শহীদ শফিউর রহমানের পিতা। ২৬ ফেব্রুয়ারি আনুষ্ঠানিকভাবে শহীদ মিনারের উদ্বোধন করেন দৈনিক আজাদ পত্রিকার সম্পাদক আবুল কালাম শামসুদ্দীন।

গণআন্দোলনের মুখে পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় সরকার শেষ পর্যন্ত নতি স্বীকার করতে বাধ্য হয় এবং ১৯৫৬ সালে সংবিধান পরিবর্তনের মাধ্যমে বাংলা ভাষাকে পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষার স্বীকৃতি প্রদান করে। ১৯৯৯ সালে ইউনেস্কো বাংলা ভাষা আন্দোলন, মানুষের ভাষা এবং কৃষ্টির অধিকারের প্রতি সম্মান জানিয়ে ২১ ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে ঘোষণা করে যা বৈশ্বিক পর্যায়ে সাংবার্ষিকভাবে গভীর শ্রদ্ধা ও যথাযোগ্য মর্যাদার সাথে উদযাপন করা হয়।

এই বিভাগের আরো খবর