শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ৬ ১৪৩১   ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

তরুণ কণ্ঠ|Torunkantho
২২৭

বনানী কবরস্থানে চিরনিদ্রায় শায়িত নায়ক ওয়াসিম

তরুণ কণ্ঠ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৮ এপ্রিল ২০২১  

বাংলা চলচ্চিত্রের সোনালী দিনের সুপারস্টার, এক সময়ের পর্দা কাঁপানো নায়ক, ঢাকাই সিনেমার জনপ্রিয় অভিনয়শিল্পী ওয়াসিমকে বনানী কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে৷

চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক জায়েদ খান জানান, আজ (রোববার) বাদ জোহর গুলশানের আজাদ মসজিদে নায়ক ওয়াসিমের প্রথম নামাজে জানাজা এবং বনানীতে দ্বিতীয় জানাজা শেষে বনানী কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।

শনিবার (১৭ এপ্রিল) দিবাগত রাত সাড়ে ১২টায় মারা যান নায়ক ওয়াসিম। গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় রাজধানীর শাহাবুদ্দিন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ওয়াসিমকে মৃত ঘোষণা করেন।

চিত্রনায়ক ওয়াসিম গত কয়েকদিন ধরে বাসায় শয্যাশায়ী ছিলেন। তার উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নিতে চেয়েছিল পরিবার। কিন্তু করোনার প্রকোপ বেড়ে যাওয়ার কারণে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট বন্ধ থাকায় তাকে বিদেশে নিয়ে যেতে পারেননি তারা।

ওয়াসিম বিয়ে করেছিলেন চিত্রনায়িকা রোজীর ছোট বোনকে। তাদের দুটি সন্তান হয়- পুত্র দেওয়ান ফারদিন এবং কন্য বুশরা আহমেদ। ২০০০ সালে তার স্ত্রীর অকালমৃত্যু ঘটে। ২০০৬ সালে ওয়াসিমের কন্যা বুশরা আহমেদ চৌদ্দ বছর বয়সে মারা যান। 
অন্যদিকে পুত্র ফারদিন লন্ডনের কারডিফ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এলএলএম পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে ব্যারিস্টার হিসেবে আইন পেশায় নিয়োজিত আছেন।

ওয়াসিম নামে পরিচিত পেলেও তার আসল নাম মেজবাহ উদ্দিন আহমেদ। ১৯৫০ সালের ২৩ মার্চ চাঁদপুর মতলব উত্তরের আমিরাবাদ এলাকার ফরাজিকান্দিতে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭১ বছর। 

তাকে বাংলা চলচ্চিত্রের অ্যাকশন এবং লোক ফ্যান্টাসির নায়ক হিসেবে অপ্রতিদ্বন্দ্বী মনে করা হত। কলেজের ছাত্রাবস্থায় তিনি বডি বিল্ডার হিসেবে নাম করেছিলেন। ১৯৬৪ সালে তিনি বডি বিল্ডিংয়ের জন্য ইস্ট পাকিস্তান খেতাব অর্জন করেছিলেন।

প্রখ্যাত চিত্র পরিচালক এস এম শফীর হাত ধরে চলচ্চিত্র জগতে অভিষেক ঘটে ওয়াসিমের। ১৯৭২ সালে শফী পরিচালিত ‘ছন্দ হারিয়ে গেলো’ চলচ্চিত্রের সহকারী পরিচালক হন তিনি। এতে ছোট একটি চরিত্রে অভিনয়ও করেন। ১৯৭৪ সালে আরেক প্রখ্যাত চিত্রনির্মাতা মহসিন পরিচালিত ‘রাতের পর দিন’ চলচ্চিত্রে প্রথম নায়ক হিসেবে আত্মপ্রকাশ ঘটে তার। চলচ্চিত্রটির সাফল্যে রাতারাতি সুপারস্টার বনে যান তিনি। 

ওয়াসিম ১৫২টির মতো ছবিতে নায়ক ছিলেন। অল্প কিছু ছবি ছাড়া প্রতিটি ছবিই সুপারহিট হয়েছিল। ‘দি রেইন’ তাকে বিশ্ববাসীর কাছে পরিচয় করিয়ে দেয়। পৃথিবীর ৪৬টি দেশে ‘দি রেইন’ মুক্তি পেয়েছিল। ছবিতে ওয়াসিমের নায়িকা ছিলেন অলিভিয়া। পরবর্তী সময়ে ওয়াসিম-অলিভিয়া জুটি বেঁধে বেশ কয়েকটি ছবিতে অভিনয় করেন। ‘বাহাদুর’ এর মধ্যে একটি উল্লেখযোগ্য। 

এছাড়া লুটেরা, লাল মেম সাহেব, বেদ্বীন প্রভৃতি ছবিও সফল হয়েছিল। শাবানা, সুচরিতা, অঞ্জু ঘোষ, সুজাতার বিপরীতেও তিনি অভিনয় করেছিলেন। তবে শাবানা আর অলিভিয়ার সঙ্গে ওয়াসিম যেসব ছবিতে অভিনয় করেছেন তার প্রতিটিই ব্যবসাসফল হয়েছিল। ‘রাজ দুলারী’তে ওয়াসিম ও শাবানার অভিনয় দর্শকদের দারুণ মুগ্ধ করেছিল। 

১৯৭৩ থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত চলচ্চিত্রে শীর্ষ নায়কদের একজন ছিলেন ওয়াসিম।
 

এই বিভাগের আরো খবর