শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ৬ ১৪৩১   ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

তরুণ কণ্ঠ|Torunkantho
৩৪৪

টেন্ডার চাঁদাবাজির টাকায় আমিরাতে বিনিয়োগ

মুহাম্মদ সেলিম, আমিরাত থেকে ফিরে

প্রকাশিত: ২৫ নভেম্বর ২০১৯  

 

দেশ থেকে লুট ও চাঁদাবাজির টাকায় সংযুক্ত আরব আমিরাতে সম্পদের পাহাড় গড়ছে চিহ্নিত চাঁদাবাজ ও টেন্ডারবাজরা। অনেকে ‘ইনভেস্টর’ ভিসা নিয়ে সেজেছেন বিনিয়োগকারী। শুধু চিহ্নিত টেন্ডার ও চাঁদাবাজরা নন, পিছিয়ে নেই রাজনীতিবিদ ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলরা। তারা আমিরাতে বিভিন্ন রাজ্যে ‘ইনভেস্টর’ ভিসা নিয়ে সেজেছেন একেক জন বড় বিনিয়োগকারী। দেশ থেকে পালিয়া যাওয়া ব্যক্তিদের ‘ইনভেস্ট’র ভিসা পেতে সহায়তা করছেন এক বাংলাদেশি প্রবাসী। তিনি নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, গত চার মাসে কমপক্ষে ২০০ বাংলাদেশিকে ইনভেস্টর ভিসা পেতে সহায়তা করেছি। যাদের ভিসা পেতে সহায়তা করেছি তাদের বেশির ভাগই রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত। প্রত্যেকজন বাংলাদেশি টাকায় তিন থেকে পাঁচ লাখ খরচ করেছে ইনভেস্টর ভিসার পেছনে।’ এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আরব আমিরাতের সরকার কাউকে ইনভেস্টর ভিসা দেওয়ার আগে নিজ দেশে কোনো কর্মকান্ডে জড়িত ছিল কি না তা দেখে না। যতক্ষণ পর্যন্ত আমিরাতে কোনো অপরাধ কর্মকান্ডে জড়িত হবে না, ততক্ষণ এখানে নিরাপদ। তাই বাংলাদেশি অপরাধীরা সেইফ জোন হিসেবে বেচে নিচ্ছে আরব আমিরাতকে।’ জানা যায়, গত দু-এক বছর ধরেই বাংলাদেশের দুর্র্ধষ সন্ত্রাসী, চিহ্নিত চাঁদাবাজ এবং টেন্ডারবাজদের সংযুক্ত আরব আমিরাতে ইনভেস্টর ভিসা নেওয়ার প্রবণতা বেড়েছে। সাম্প্রতি দেশে দুর্নীতিবিরোধী অভিযান শুরু হলে এদের সংখ্যা বেড়েছে আরও কয়েকগুণ। ইনভেস্টর ভিসা নিয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতে অবস্থানকারীদের মধ্যে রয়েছে চট্টগ্রামের শীর্ষ টেন্ডারবাজার ও সন্ত্রাসী বাহিনী মদদের অভিযুক্ত যুবলীগ নেতা হেলাল আকবর চৌধুরী বাবর, এসরারুল হক, দিদারুল আলম, হাবিব খানসহ চট্টগ্রামের অর্ধশতাধিক সন্ত্রাসী। ইনভেস্টর ভিসা নেওয়ার ক্ষেত্রে পিছিয়ে নেই চট্টগ্রামের রাজনীতিবিদরাও। সংযুক্ত আরব আমিরাতে ইনভেস্টর ভিসা নেওয়ার তালিকায় রয়েছেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের কয়েকজন কাউন্সিলর, মহানগর আওয়ামী লীগ, যুবলীগ এবং স্বেচ্ছাসেবক লীগের কমপক্ষে ২০ নেতা, চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের এক যুগ্মসম্পাদকসহ জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে কমপক্ষে ২০ জন নেতা, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের এক শীর্ষ নেতা ও জেলা-উপজেলা পর্যায়ের কমপক্ষে ১৫ নেতা। সংযুক্ত আরব আমিরাতের বাংলাদেশি কমিউনিটি নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, দেশে দুর্নীতিবিরোধী অভিযান শুরু হওয়ার পর থেকে বাংলাদেশ থেকে অনেক নেতা পালিয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিভিন্ন রাজ্যে অবস্থান করছে। তারা ইনভেস্টর ভিসা নিয়ে এ দেশে বিনিয়োগকারী সেজেছে। অনেকে কোটি কোটি টাকা বিনিয়োগ করে বড় বড় প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলছে। এ তালিকায় রয়েছেন দেশের চিহ্নিত সন্ত্রাসী, টেন্ডারবাজ, চাঁদাবাজরা। পিছিয়ে নেই আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগের জেলা ও কেন্দ্রীয় নেতারাও।
 

এই বিভাগের আরো খবর