শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ৫ ১৪৩১   ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

তরুণ কণ্ঠ|Torunkantho
৬৩২

গিনেজ বিশ্ব রেকর্ডসে শাহ্ সিমেন্ট

নুরুল আফছার

প্রকাশিত: ২ ডিসেম্বর ২০১৯  

 

গিনেজ বিশ্ব রেকর্ডে নাম উঠেছে শাহ্‌ সিমেন্টের। বিশ্বের সবচেয়ে বড় ভার্টিক্যাল রোলার মিল (ভিআরএম) স্থাপন করে এ রেকর্ড গড়ল বাংলাদেশের সিমেন্ট উৎপাদনের অন্যতম শীর্ষ প্রতিষ্ঠানটি। এর মাধ্যমে বাংলাদেশের সিমেন্ট শিল্পও পৌঁছে গেল নতুন এক মাইলফলকে।

 এ ভার্টিক্যাল রোলার মিলের গ্রাইন্ডিং টেবিল ডায়ামিটার ৮.০৮ মিটার এবং রোলার টেবিল ডায়ামিটার ২.৬৪ মিটার।

ছয়টি রোলার সমন্বিত এ ভিআরএম প্রতিদিন ১৫ হাজার এবং বছরে ৬০ লাখ টন সিমেন্ট উৎপাদন করতে সক্ষম। সিমেন্ট উৎপাদনে একই সঙ্গে আকারে বৃহৎ এবং সর্বাধুনিক প্রযুক্তির সমন্বয়ের উদাহরণ পৃথিবীতে এটাই প্রথম। এ কারণে এই ভিআরএমকে ‘পৃথিবীর একক বৃহত্তম’ হিসেবে সত্যায়িত এবং নথিভুক্ত করেছে গিনেজ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস।

সিমেন্টের উন্নতমান নিশ্চিত করার পাশাপাশি জ্বালানি সাশ্রয়ী হিসেবে ভিআরএম প্রযুক্তি তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে সারা বিশ্বে সমাদৃত। ভিআরএম প্রযুক্তিতে ডেনমার্কের এফএলস্মিথ-এর বিশ্বব্যাপী সুখ্যাতি রয়েছে। শাহ্‌ সিমেন্টের নতুন এই ভিআরএম স্থাপনে কারিগরি ও প্রযুক্তিগত সহযোগিতা দিয়েছে এফএলস্মিথ।

নতুন এই ভার্টিক্যাল রোলার মিলে সর্বাধুনিক ডিজিটাল এবং আর্টিফিশিয়াল ইন্টিলিজেন্স (এআই) প্রযুক্তি সংযুক্ত করা হয়েছে। নিজেদের অগ্রযাত্রাকে আরেক ধাপ এগিয়ে নিতে বিশ্বের সবচেয়ে বড় ভিআরএম প্র্রযুক্তি সংযুক্ত করার পরিকল্পনা হাতে নেয় শাহ্‌ সিমেন্ট। ডেনমার্কের এফএলস্মিথ ও বাংলাদেশের শাহ্ সিমেন্টের পারস্পারিক সহযোগিতায় আলোর মুখ দেখে ‘পৃথিবীর সর্ববৃহৎ ভার্টিক্যাল রোলার মিল’।

আবুল খায়ের গ্রুপের পরিচালক (ব্র্যান্ড মার্কেটিং) নওশাদ চৌধুরী বলেছেন, ‘ক্রেতাদের আস্থাই শাহ্ সিমেন্টের মূল ভিত্তি। ১৫ বছরেরও বেশি সময় ধরে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক ক্রেতা নিজের বাড়ি নির্মাণে শাহ্ সিমেন্টের ওপর আস্থা রেখেছেন। ক্রেতাদের এই অবিচল আস্থা আমাদের অনুপ্রাণিত করেছে এক বড় স্বপ্ন দেখার; শাহ্ সিমেন্টকে নিয়ে, বাংলাদেশকে নিয়ে। আমরা যখন উৎপাদন সক্ষমতা বাড়ানোর কথা ভাবছিলাম, তখন এমন উৎপাদন প্রক্রিয়ার কথা ভেবেছি, যা দেশজুড়ে শাহ্ সিমেন্টের নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহই শুধু নিশ্চিত করবে না, প্রতিটি ব্যাগে সেরা মানের সিমেন্টের নিশ্চয়তাও দেবে।

শাহ্‌ সিমেন্ট ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের পরিচালক (অপারেশনস) হাফিজ সিকান্দার বলেছেন, ‘ক্রেতাদের নিরবচ্ছিন্নভাবে উন্নতমানের সিমেন্ট সরবরাহ শাহ্ সিমেন্টের মূল লক্ষ্য। এই লক্ষ্য বাস্তবায়নে প্রযুক্তিগতভাবে বড় একটি ধাপ এগিয়ে যাওয়ার প্রয়োজন ছিল। আমরা এই প্রযুক্তিগত উৎকর্ষের জন্য এফএলস্মিথকে বেছে নিই, সিমেন্ট প্রযুক্তিতে যাদের রয়েছে ৪০ বছরেরও বেশি অভিজ্ঞতা।’

তিনি জানিয়েছেন, শাহ্ সিমেন্টের ভিআরএম প্রযুক্তির সুফল পেতে আরও সংযোজিত হয়েছে ‘মাল্টি কম্পার্টমেন্ট সাইলো’। যার মাধ্যমে ভিন্ন ভিন্ন বড় প্রকল্পের প্রয়োজন অনুযায়ী সুনির্দিষ্ট কম্পোজিশনের সিমেন্ট উৎপাদন খুব সহজেই সম্ভব। এতে করে সাধারণ ক্রেতাদের পাশাপাশি দেশের বড় বড় অবকাঠামোগত প্রকল্পের জন্য সুনির্দিষ্ট কম্পোজিশনের সিমেন্ট সরবরাহও নিশ্চিত করতে পারবে শাহ্‌ সিমেন্ট।

শুধু আকারে বড় কিংবা অনেক বেশি উৎপাদন সক্ষম বলেই নয়; এর সঙ্গে যুক্ত আছে ‘ইন্টেলিজেন্ট মনিটরিং কন্ট্রোল সিস্টেম’। যার মাধ্যমে কম্পিউটার নিয়ন্ত্রিত প্যানেল থেকে পুরো প্রক্রিয়াটি পর্যবেক্ষণ করা হয়। ফলে উৎপাদিত সিমেন্টের গুণগত মান সূক্ষ্ম থেকে সূক্ষ্ণতরভাবে বিশ্লেষণ সম্ভব হয়। একই সঙ্গে উৎপাদনের বিভিন্ন স্তরের সমন্বয়ও করা যায় যথাযথভাবে। এই ভিআরএমের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) উৎপাদন প্রক্রিয়ায় কোনো সমস্যা দেখা দিলে নিজেই বিল্ট-ইন-টুলস দিয়ে বেশির ভাগ সমস্যার সমাধান করতে পারে।

বিশ্বের সবচেয়ে বড় ভিআরএম প্রযুক্তি সম্পর্কে এফএলস্মিথের ভাইস প্রেসিডেন্ট সরেন হোম বলেন, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আমরা এর কারিগরি দিকগুলো উন্নয়নে নজর দিয়েছি, পাশাপাশি সিমেন্ট উৎপাদনকারীদের পরামর্শ নিয়ে এর অপারেশনে বিভিন্ন নতুন প্রযুক্তিও সংযোজন হয়েছে। আমাদের যে ওকে মিলটি বাংলাদেশের শাহ্‌ সিমেন্ট ইন্ডাস্ট্রিজে স্থাপিত হয়েছে, একক মিল হিসেবে এই সময়ে তা বিশ্বে সর্ববৃহৎ। আমরা আশা করি, এর ফলে তারা গ্রাহকদের আরও উন্নত প্রযুক্তিতে উৎপাদিতে সিমেন্ট সরবরাহে সক্ষম হবেন।

সিমেন্ট খাতে যুক্ত বিশেষজ্ঞেরা বলছেন, এই শিল্পের প্রযুক্তিগত উৎকর্ষে বাংলাদেশকে বিশ্ব দরবারে আরও এগিয়ে নিল শাহ্‌ সিমেন্টের এই অর্জন।

এই বিভাগের আরো খবর