মঙ্গলবার   ১৯ মার্চ ২০২৪   চৈত্র ৫ ১৪৩০   ০৯ রমজান ১৪৪৫

তরুণ কণ্ঠ|Torunkantho
৩৪২

আওয়ামী লীগের দলীয় মর্যাদায় উভয়ে সমান স্থান অর্জন করেছেন দুই নেতা

জাকির হোসেন সুমন, সিলেট

প্রকাশিত: ১১ জানুয়ারি ২০২১  

সিলেট জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগে পদ পাওয়ায় হেভিওয়েট দুই নেতা দলীয় মর্যাদায় সমান স্থান অর্জন করেছেন। এই দুই নেতার একজন হলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেন ও অপরজন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাবেক তিনবারের সফল সাংগঠনিক সম্পাদক এডভোকেট মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ।
 
গত ৮ জানুয়ারি ঘোষিত মহানগর আওয়ামী লীগের কমিটিতে প্রথম সদস্য হিসেবে পদ পেয়েছেন ড. মোমেন ওই কমিটির দ্বিতীয় সদস্য হয়েছেন সিলেট সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর আজম খান।

একইদিন ঘোষিত সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের কমিটিতে প্রথম সদস্য হিসেবে স্থান পেয়েছেন এডভোকেট মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ।

ওই কমিটিতে দ্বিতীয় সদস্য হিসেবে স্থান পেয়েছেন প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ।
 
জেলার মর্যাদায় মহানগর আওয়ামী লীগে এক নম্বর সদস্য পদে ড. মোমেন ও জেলায় এক নম্বর সদস্য পদে এডভোকেট মিসবাহ সিরাজ স্থান পাওয়ায় চুলছেড়া বিশ্লেষণ চলছে দলীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে। দলীয় প্রধান শেখ হাসিনার প্রজ্ঞার কারণে ওই সমীকরণ হয়েছে বলে জানিয়েছেন অনেকে।
 
দলীয় নেতাকর্মীরা বলছেন, সিলেট জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের যে কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে; তা এক কথায় অসাধারণ। কমিটি দুটি নিয়ে কর্মীদের মধ্যে কোনো ক্ষোভ নেই। নেই কোনো অভিযোগ।

 সবাই এক কথায় কমিটি দু’টিকে অসাধারণ বলে আখ্যায়িত করছেন। কমিটি দু’টিতে যারা স্থান পেয়েছেন তাদের মধ্যে ৯৯ ভাগই রাজনৈতিক। রাজনীতিক নেতাদের কর্মতৎপরতায় দলের কর্মকান্ড আরো চাঙ্গা হয়ে উঠবে। প্রাণ ফিরে পাবেন দলীয় কর্মীরা-এমনটা জানিয়েছেন অনেকে।
 
দলীয় নেতাকর্মীরা বলছেন, কমিটি দু’টির বড় আকর্ষণ হচ্ছে ড. মোমেন ও এডভোকেট মিসবাহ সিরাজ। শিক্ষা জীবন শেষ হওয়ার পর থেকে ড. মোমেন সারাবিশ্বে কূটনৈতিক কর্মকান্ড চালিয়েছেন।

আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে বাংলাদেশের মান মর্যাদা অনেক উচ্চতায় নিয়ে গেছেন তিনি। ড. মোমেনের বড় ভাই আবুল মাল আবদুল মুহিত আওয়ামী লীগের পরিবারে যোগ দিয়ে ২০০১ সালে নৌকা প্রতীক নিয়ে সিলেট-১ আসনে নির্বাচন করেন। সামান্য ভোটের ব্যবধানে তিনি পরাজিত হন। ২০০৮ সালে অনুষ্ঠিত জাতীয় নির্বাচনে আবুল মাল আবদুল মুহিত বিজয়ী হন নৌকা প্রতীক নিয়ে।

সরকারের অর্থমন্ত্রী করা হয় আবুল মাল আবদুল মুহিতকে। ২০১৮ সাল পর্যন্ত তিনি ছিলেন আওয়ামী লীগের অর্থমন্ত্রী। ওই বছর বড় ভাইয়ের হাত ধরে ড. একে আবদুল মোমেন আওয়ামী লীগের হয়ে নির্বাচন করেন সিলেট-১ আসনে। বিজয়ী হয়েই তিনি আওয়ামী লীগ সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন।
 
বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনের অধিকারী এডভোকেট মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ। ছাত্র জবানা থেকে ছাত্র রাজনীতি করেছেন। দাঁপিয়ে বেড়িয়েছেন সিলেটের অলিগলি। ছাত্র নেতৃত্ব পেয়েছেন একাধিকবার।

জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ও সভাপতি ছিলেন একাধিকবার। স্বৈরশাসক এরশাদের সময় খুনী মোস্তাকের মঞ্চ ভাংচুর করেছেন। জুতা পেটা করেছেন খুনী মোস্তাককে।

এ ঘটনায় দীর্ঘদিন কারাবন্দি জীবন কাটাতে হয়েছে মিসবাহ সিরাজকে। বিএনপি ও জাতীয় পার্টির সরকারের সময় মিসবাহ সিরাজ সিলেটের রাজপথ সর্বদাই গরম করে রাখতেন। এ জন্য চরম খেসারত দিতে হয়েছে তাকে। 

অসংখ্য মামলার আসামি হয়ে ফেরারী জীবন কাটাতে হয়েছে। পুলিশের হাতে পাকড়াও হয়ে বন্দিজীবন কাটাতে হয়েছে কারাগারে। সিলেটের আওয়ামী পরিবারের আপনজন হিসেবে খ্যাত মিসবাহ সিরাজ পরবর্তীতে সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন। ২০০৪ সালে বিএনপি সরকারের জবানায় সিলেট নগরীর গুলশান সেন্টারে গ্রেনেড হামলার শিকার হয়েছিলেন মিসবাহ সিরাজ। গ্রেনেড হামলায় ওই সময় আওয়ামী লীগ নেতা মো. ইব্রাহিম নিহত হন। এ ঘটনায় মহানগর আওয়ামী লীগের ১৯ জন নেতা আহত হয়েছিলেন। 

চারদলীয় জোট সরকারের সময় মহাজোটের সিলেটের মহাসচিবের দায়িত্ব পেয়েছেন তিনি। রাজনৈতিক পুরস্কার হিসেবে মিসবাহ সিরাজকে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক করা হয়। শেখ হাসিনার আস্থাভাজন হিসেবে খ্যাত মিসবাহ সিরাজ তিনবার সফলতার সাথে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন। শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রতি একান্ত অনুচর মিসবাহ সিরাজকে সর্বশেষ সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের প্রথম সদস্য করা হয়।

এই বিভাগের আরো খবর