মধুখালীতে ৪০ দিনে ২৭ বাড়ি ও ৩৪টি গরু চুরি
এস এম আবুল বাশার
প্রকাশিত : ১২:৫৭ পিএম, ১১ জুলাই ২০১৯ বৃহস্পতিবার
ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলায় গত জুন মাসের প্রথম থেকে ৯ জুলাই পর্যন্ত ৪০ দিনে পৌরসভা ও উপজেলার সাতটি ইউনিয়নের ১৮টি বাড়িতে ৩৪ গরু চুরি এবং বাড়ি ও বাজারে নয়টি চুরির ঘটনা ঘটেছে। হঠাৎ মধুখালীতে এসব চুরির ঘটনায় আইন-শৃঙ্খলার চরম অবনতি হওয়ায় এলাকাবাসী আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন।
এদিকে পুলিশ অভিযান চালিয়ে কোরকদী ইউনিয়ন থেকে চার গরু চোরকে আটক করে জেলহাজতে পাঠিয়েছে। সেই সঙ্গে তিনটি গরু উদ্ধার এবং গাজনার বেলেশ্বরের বিদ্যুতের ট্রান্সফরমার চুরির ঘটনায় কয়েক চোরকে আটক করেছে।
গত সোমবার রাতে নওপাড়ার গোপালপুর গ্রামে এক গরু চুরি এবং মঙ্গলবার রাতে কামারখালী বাজারে তিন দোকানে চুরির ঘটনা ঘটে। স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানরা এসব চুরির ঘটনা নিশ্চিত করেছেন।
উপজেলার জাহাপুর, বাগাট, রায়পুর, মেগচামী, গাজনা, আড়পাড়া ও কোরকদী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানরা জানান, গত জুন মাসের শেষ সপ্তাহে জাহাপুরে তিনটি বাড়ি থেকে সাতটি গরু চুরি হয়।
যার আনুমানিক মূল্য প্রায় সাড়ে ছয় লাখ টাকা। এছাড়া দুটি বাড়িতে চুরি হয়। মেগচামী ইউনিয়নে দুটি বাড়ি থেকে চারটি গরু চুরি হয়। যার মূল্য প্রায় তিন লাখ টাকা, বাগাট ইউনিয়নের একটি বাড়ি থেকে একটি গাভি ও বাছুর চুরি হয়।
যার মূল্য ৭০ হাজার টাকা এবং বাগাট বাজারে একটি দোকানে তালা ভেঙে প্রায় চার লক্ষাধিক টাকার মালামাল নিয়ে যায় চোরেরা।
আড়পাড়া ইউনিয়নের পশ্চিম আড়পাড়া এবং শান্তিপুরে ৬ জুলাই দুটি বাড়ি থেকে চারটি বড় গরু চুরি হয়, যার আনুমানিক মূল্য প্রায় সাড়ে তিন লাখ টাকা। নওপাড়া ইউনিয়নের দড়িবাজার আড়কান্দিতে একটি গরু চুরি হয়, যার মূল্য প্রায় ৬০ হাজার টাকা।
এছাড়া ৯ জুলাই রাতে পৌরসভার গোপালপুরের এক বাড়িতে একটি গরু চুরি এবং কামারখালী বাজারের এক চাল ব্যবসায়ীর ঘর থেকে ১১১ বস্তা চাল এবং অপর দুটি দোকানের নগদ ৩৫ হাজার টাকা ও অন্যান্য মালামাল চুরি হয়।
মধুখালী পৌরসভার প্যানেল মেয়র মির্জা আব্বাস হোসেন চুরির ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, পৌরসভা এলাকার ২নং ওয়ার্ডে পাঁচটি বাড়িতে ১১টি গরু এবং ৮ জুলাই দিবাগত রাতে গোপালপুর গ্রামে একটি গরু চুরি হয়।
যার আনুমানিক মূল্য সাড়ে সাত লাখ টাকা। এছাড়া ৬নং ওয়ার্ডে থানার পূর্বপাশে আজিজের বাড়ি, সাবেক এক এসআইয়ের ছেলের মোটরসাইকেল তালা ভেঙে নিয়ে যায় চোরেরা।
৩নং ওয়ার্ডের গোন্দারদিয়া সাতাইনির মাঠে জাহাঙ্গীরের বাড়িতে তালা ভেঙে এবং ৫নং ওয়ার্ডের পশ্চিম গাড়াখোলা বনানী রোডে একটি দোকানে চুরি হয়। তাদের প্রায় তিন লক্ষাধিক টাকার মালামাল ও নগদ টাকা নিয়ে যায় চোরেরা।
তিনি আরও বলেন, চুরি ঠেকাতে স্থানীয় থানা পুলিশ, জনপ্রতিনিধি এবং গ্রাম পুলিশসহ এলাকাবাসীর সমন্বয়ে পাহারাদার নিয়োগ না দিলে দিন দিন বাড়তেই থাকবে চুরির ঘটনা।
এ ব্যাপারে মধুখালী থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মিজানুর রহমান বলেন, গরু চুরির বিষয়ে কিছু মামলা ও সাধারণ ডায়েরি হয়েছে। আমরা কয়েকজন গরু চোরকে আটক করে জেলহাজতে পাঠিয়েছি।
তবে ৮ জুলাই রাতে নওপাড়ার গোপালপুর গ্রামে গরু চুরি এবং ৯ জুলাই রাতে কামারখালী বাজারে চুরির ব্যাপারে থানায় কেউ কিছু জানায়নি এবং কোনো অভিযোগও করেনি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।