শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ৫ ১৪৩১   ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

সৌরভ নিখোঁজের ৯ দিন

প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা সোহেল তাজের

প্রকাশিত : ০১:০৪ পিএম, ১৮ জুন ২০১৯ মঙ্গলবার

সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী সোহেল তাজের ভাগ্নে সৈয়দ মো. ইফতেখার আলম সৌরভকে ফিরে পেতে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন নিখোঁজের বাবা ও মা। সংবাদ সম্মেলনে সোহেল তাজ উপস্থিত থেকে বলেন, ‘আমরা সৌরভকে জীবিত এবং অক্ষত অবস্থায় ফেরত চাচ্ছি। যদি কেউ আইনবহির্ভূতভাবে এবং ক্ষমতার অপব্যবহার করে এ অপহরণের ঘটনা ঘটিয়ে থাকেন তাহলে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে উপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।’

গতকাল সোমবার দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে সোহেল তাজ ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন সৌরভের বাবা মো. ইদ্রিস আলম ও মা সৈয়দা ইয়াসমিন আরজুমান। এ সময় সৌরভকে ফিরে পাওয়ার দাবি জানিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন সৌরভের মা। 

লিখিত বক্তব্যে ইয়াসমিন আরজুমান জানান, ২০১৭ সালে সৌরভের সঙ্গে সওদা নামে এক মেয়ের পরিচয় হয়। পরিচয় থেকে প্রেম এবং একপর্যায়ে তারা টেলিফোনে বিয়েও করে। আর এ বিয়েটিও হয় মেয়ের চাপাচাপিতে। সব কিছু জেনেও সওদাকে তার বাবা জোর করে অন্য জায়গায় বিয়ে দেন। ২০১৮ সালের এপ্রিল-মের কোনো একসময় ওই বিয়ে ভেঙে যায়। বিয়ে না টেকার জন্য মেয়ের বাবা আজাদ চৌধুরী সৌরভকে দোষারোপ করেন এবং প্রাণনাশের হুমকি দেন। সৌরভের মা দাবি করেন, এর পর থেকেই তাঁর ছেলের বিরুদ্ধে ওঠেপড়ে লাগেন মেয়ের বাবা। বিভিন্ন বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থার মাধ্যমে উঠিয়ে নিয়ে গিয়ে সওদার সঙ্গে যোগাযোগ না করার কথা বলে সৌরভকে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয় বিভিন্ন সময়ে।

তিনি আরো জানান, গত ৯ জুন বিকেল ৩টার সময় একটি বিশেষ বাহিনীর কর্মকর্তা ফোন করে চাকরি দেওয়ার কথা বলে তাকে ডেকে নেয়। এর পর থেকে সৌরভ নিখোঁজ। 

কান্নাজড়িত কণ্ঠে সৌরভের মা বলেন, ‘আমি আমার সন্তানকে ফিরে পেতে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করছি।’ এ সময় এক সাংবাদিক সোহেল তাজের কাছে জানতে চান, রাষ্ট্রীয় কোনো বাহিনী কোনো ব্যক্তির হয়ে কাজ করতে পারে কি না? এমন প্রশ্নের কোনো উত্তর দেননি সোহেল তাজ। তিনি জানান, ভাগ্নে নিখোঁজ হয়েছে বলেই তিনি এ সংবাদ সম্মেলনে এসেছেন বোনকে সহায়তা করার জন্য।

এক প্রশ্নের জবাবে সোহেল তাজ জানান, নিখোঁজ হওয়ার খবর জানার পর তিনি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, আইজিপি ও র‌্যাবের ঊর্ধ্বতনদের সঙ্গে কথা বলেছেন। তিনি বলেন, ‘কাউকে ছোট করা বা আঘাত করা আমাদের উদ্দেশ্য নয়, আমরা ছেলেটাকে ফেরত চাই। আমাদের উদ্দেশ্য হলো ছেলেটিকে জীবিত ও অক্ষত অবস্থায় তার মায়ের কাছে ফিরিয়ে আনার। ছেলেটি তার মায়ের কাছে ফিরে আসুক।’

আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘অবশ্য এটা বলা বাহুল্য যে বঙ্গবন্ধুর ডাকে আমরা মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে দেশ স্বাধীন করেছি। আমাদের লক্ষ্যই ছিল এমন একটি রাষ্ট্র এমন একটি দেশ হবে, যেখানে গণতন্ত্র বিরাজ করবে। গণতন্ত্রের মূল লক্ষ্যই হচ্ছে ন্যায়বিচার। সবাই যেন সুবিচার পায়। আইনের আওতায় যেন সবাই সুবিচার পায়। আমি আশা করব, আইনবহির্ভূত এবং ক্ষমতার অপব্যবহার যদি কেউ করে থাকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যেন উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করেন।’ আরেক প্রশ্নের জবাবে সোহেল তাজ বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশের নাগরিক। আমরা আশা করব কোনো নাগরিকের যেন এ দশা না হয়। আজ আমার ভাগ্নে কাল আপনার ভাই এমন শিকার হতে পারে। আরেক দিন হয়তো আপনার সন্তান হতে পারে। কার কী পরিচয় সেটা মুখ্য বিষয় নয়। আইনের শাসনে রাষ্ট্র চলবে।’