বৃহস্পতিবার   ০৪ ডিসেম্বর ২০২৫   অগ্রাহায়ণ ১৯ ১৪৩২   ১৩ জমাদিউস সানি ১৪৪৭

সরকারকে না জানিয়ে ভোজ্যতেলের দাম বাড়িয়েছেন ব্যবসায়ীরা

নাজমুল হুদা

প্রকাশিত : ০৬:৪৪ পিএম, ৩ ডিসেম্বর ২০২৫ বুধবার

দেশের বাজারে ভোজ্যতেলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা (পদবি ব্যবহার করা হলো)। তিনি আজ এক সংবাদ সম্মেলনে স্পষ্ট জানিয়ে দেন যে, সম্প্রতি ভোজ্যতেলের দাম বাড়ানোর এই সিদ্ধান্ত সরকার বা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে না জানিয়েই নেওয়া হয়েছে, যা সম্পূর্ণভাবে অসৎ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত কারসাজি।

 

বাণিজ্য উপদেষ্টার এই বক্তব্যে স্পষ্ট হয়ে উঠেছে যে, ভোজ্যতেল আমদানিকারক ও পরিবেশক সিন্ডিকেট সরকারের স্থিতিশীল রাখার প্রচেষ্টাকে অগ্রাহ্য করে বাজারে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করছে।

 

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সাধারণত প্রতি মাসেই ভোজ্যতেলসহ অন্যান্য পণ্যের মূল্য সমন্বয়ের বিষয়ে ব্যবসায়ীদের আলোচনা হয়। কিন্তু এবারের মূল্যবৃদ্ধির ক্ষেত্রে সেই আলোচনা বা অনুমোদন নেওয়া হয়নি।

 

বাজার চিত্র: গত এক সপ্তাহে প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম ৫ থেকে ১০ টাকা বাড়ানো হয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে মূল্য কমানোর উদ্যোগ নেওয়ার পরও এই মূল্যবৃদ্ধি ঘটেছে।

 

বাণিজ্য উপদেষ্টার বক্তব্য: "ব্যবসায়ী সংগঠনের পক্ষ থেকে মূল্যবৃদ্ধির কোনো প্রস্তাব আমাদের কাছে আসেনি। এটা সম্পূর্ণভাবে তাদের একতরফা এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত সিদ্ধান্ত। যারা জনগণের পকেট কাটতে এই ধরনের কারসাজিতে লিপ্ত হচ্ছে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর প্রশাসনিক ও আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে।"

 

অভিযোগ: ভোজ্যতেল পরিশোধনকারী এবং আমদানিকারক কয়েকটি বড় প্রতিষ্ঠান কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে মূল্য বাড়ানোর এই খেলার মূল হোতা বলে ধারণা করা হচ্ছে।

 

বাণিজ্য উপদেষ্টা নিশ্চিত করেছেন, এই অননুমোদিত মূল্যবৃদ্ধির বিষয়ে সরকার হাত গুটিয়ে বসে থাকবে না। দ্রুতই বাজার নিয়ন্ত্রণে আনতে কয়েকটি পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে:

 

১. জরিপ ও তদন্ত: জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরকে (DNCRP) সারাদেশে জরুরি ভিত্তিতে বাজার জরিপ ও তদন্ত চালানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ২. লাইসেন্স বাতিল: কারসাজির প্রমাণ পেলে অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর ডিলারশিপ ও আমদানি লাইসেন্স বাতিল করার মতো কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া

হবে।

 

৩. আমদানি শুল্ক: প্রয়োজনে ভোজ্যতেলের আমদানি শুল্ক আরও কমানোর জন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) অনুরোধ জানানো হবে।

 

বাণিজ্য উপদেষ্টা দেশের ব্যবসায়ী সমাজকে হুঁশিয়ার করে বলেছেন, জনস্বার্থের বিপরীতে গিয়ে কোনো সিন্ডিকেটকে সুবিধা নিতে দেওয়া হবে না।