সোমবার   ০৯ ডিসেম্বর ২০২৪   অগ্রাহায়ণ ২৪ ১৪৩১   ০৭ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

পুলিশের উদাসিনতায় পল্লবীতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবণতি

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত : ০৪:১৪ পিএম, ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২২ রোববার

রাজধানীর পল্লবী থানা এলাকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবণতি ঘটেছে। ২৪ ঘন্টার ব্যবধানে দু'টি হত্যাকান্ড, ছিনতাই, দখল, পাল্টা-দখল, মাদক বাণিজ্যে পল্লবী থানা যেন হয়ে উঠেছে অপরাধীদের স্বর্গ রাজ্যে। পল্লবী থানার ওসি পারভেজ ইসলাম যোগদানের পর থেকেই পুলিশের উদাসিনতায় পল্লবী থানা এলাকা যেন হয়ে উঠেছে অপরাধ স্বর্গরাজ্য হিসেবে। পল্লবী থানা পুলিশের বিরুদ্ধে একের পর এক অভিযোগ বিভিন্ন দফতরে জমা হলেও, কোন ব্যবস্থা গ্রহণের নজীর নেই।

 

বরং, পল্লবী থানা পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে ঘুষ না দেওয়ায় মিথ্যা মামলা প্রদান, নিরীহ মানুষকে হয়রানী, সন্ত্রাসীদের প্রশ্রয়দান, মিথ্যা মাদক মামলা প্রদান, জমি দখলে সহযোগীতাসহ অসংখ্য অভিযোগ। এমন কি পল্লবী থানার ওসি এবং বিভিন্ন পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে জাতীয় প্রেস ক্লাবসহ বিভিন্ন স্থানে ডজনের বেশী মানব বন্ধন হলেও, ভূক্তভূগীরাই থাকে বিপাকে। পুলিশের বিভিন্ন দফতরে অভিযোগ, মানববন্ধন, ডিএমপি হেডকোয়ার্টারে শতাধিক ভূক্তভূগীর স্বাক্ষ্যদানে উপস্থিত হওয়া, সংবাদ সন্মেলন করেও যখন কোন কাজ হচ্ছিল না, তখন পল্লবী থানার ওসিসহ ১৭ পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে লুটপাট ও মিথ্যা মামলা দেওয়ার অভিযোগে আদালতে মামলার আবেদন করে এক ভূক্তভূগী।

পল্লবী থানা নিয়ে এই সকল অভিযোগের বিষয়ে বাংলাদেশের সকল শীর্ষ স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পরও পুলিশের বেপরোয়া আচরণ থামছে না। ফলে পল্লবী থানা এলাকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভেঙ্গে পড়েছে। গত ২১ ও ২২ ফেব্রুয়ারী পরপর দুই দিনে পল্লবী থানা এলাকায় দু'টি হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটে। ইতিপূর্বে গত বছর ১৫ ডিসেম্বর পল্লবী এলাকায় মোটরসাইকেল আরোহী দুই ছিনতাইকারীর কবলে পড়েন খোদ পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পদমর্যাদার একজন কর্মকর্তা। ছিনতাইকারীরা তার কাছ থেকে সাড়ে ১২ লাখ টাকাসহ মূলব্যান জিনিসপত্র নিয়ে যায়। সিসিটিভি ফুটেজ থাকার পরও ছিনতাইকারীদের গ্রেফতারে স্বক্ষম হয়নি পল্লবী থানা পুলিশ। পল্লবীতে ছিনতাই প্রতিদিনের ঘটনা।

 

পুলিশ ছাড়াও একজন সংবাদকর্মীর মায়ের শরীর থেকে মিরপুর বাংলা স্কুলের সামনে থেকে ১৬ ভরী গয়না ছিনতাই হয়। মামলা হলেও উদ্ধার হয়নি কিছুই। এছাড়াও প্রতিদিনই ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটলেও ছিনতাইয়ের মামলা না হয়ে হারানো জিডি হচ্ছে প্রতিনিয়ত। পল্লবীতে পুলিশের সহযোগীতায় দখল পাল্টা দখলের অভিযোগ বহু পুরোনো। পলাশ নগরে পুলিশের আশ্রয় প্রশ্রয়ে যারা দখল পাল্টা দখলে জড়িত, ২১ ফেব্রুয়ারী রাতে ঘটা হত্যাকান্ডে সেই গ্রুপই জড়িত থাকার তথ্য পাওয়া গেছে। ২২ ফেব্রুয়ারীর হত্যাকান্ডের ঘটনা আরো মর্মান্তিক। প্রকাশ্যে মাদক সেবনে বাধা দেওয়ায় খুন হয় জাহিদ। পল্লবী থানা এলাকায় রাস্তার মোড়ে মোড়ে মাদকের আখড়া গড়ে উঠেছে। বাধা দিলেই হতে হয় হামলা, মিথ্যা মামলার শিকার। হামলার
শিকার হয়ে মামলা করতে গেলে উল্টো মামলার আসামী হতে হয়। বর্তমান ওসি থানার দায়িত্ব গ্রহনের পর থেকেই তাই বেপরোয়া হয়ে উঠেছে পল্লবী থানার সন্ত্রাসীরা। এই সকল অভিযোগের বিষয়ে জানতে পল্লবী থানার ওসি পারভেজ ইসলামের সরকারী মোবাইলে কল করা হলেও, তিনি কল রিসিভ করেন নি।