শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ৫ ১৪৩১   ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

বিলুপ্তির পথে দক্ষিঞ্চলের মুখোরোচক খেজুর রস

নিজস্ব প্রতিবেদক    

প্রকাশিত : ০৪:১৪ পিএম, ২৪ নভেম্বর ২০২১ বুধবার

ইটপাথরের শহরে এখনও তেমন শীত অনুভব না হলেও গ্রামাঞ্চলে কুয়াশায় মোড়া সকালের জানান দিচ্ছে শীতের। নানা রকম খাবার, ফুল-ফল, সবজি ও পিঠাপুলির আমেজ নিয়ে হাজির হয় শীতকাল। দক্ষিঞ্চলবাসীর শীতকালীন খাদ্য তালিকায় প্রথমেই আসে অতিপ্রিয় খেজুরের রস।  

আবহমান গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্য খেজুর রস সংগ্রহে এই সময়টা ব্যস্ত থাকার কথা গাছিদের। কিন্তু সেটা এখন আর হয়ে ওঠেননি। খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহের তেমন প্রস্তুতি নেই দক্ষিঞ্চলের গ্রামগুলোতে।

কালের বিবর্তনে হারিয়ে যাচ্ছে খেজুর গাছ এবং সে গাছের রসের তৈরি শীতের পিঠা, এক সময় খেজুর রসের মনমাতানো গন্ধে মৌ, মৌ করতো বরিশালের গ্রাম অঞ্চলের পথঘাট অলি গলি এবং রস থেকে গুড় তৈরি করে তা বাজারে বিক্রি করতেন গাছিরা কিন্তু এখন তাও বাজারে পাওয়া যাচ্ছে না।

গাছিরা বলছেন, জ্বালানি কাঠ ও কয়লা আপেক্ষা খেজুর গাছ সস্তা দামে পাওয়া যায় বলে ইট ভাটায় এর চাহিদা বেশি সেজন্যই প্রায় খেজুরের গাছই কেঁটে ফেলা হয়েছে। কেননা, খেজুরের গাছে পোড়ানো ইটের রং গাঢ় হয়। সময়ের পরিবর্তনে ও সচেতনাতার অভাবে আজ হারিয়ে যেতে বসেছে ঐতিহ্যবাহী খেজুরের রস।

বরিশালের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলায় গ্রামীন মাঠে আর মেঠোপথের ধারে কোথাও কোথাও দু’একটি খেজুর গাছ দাঁড়িয়ে আছে কালের সাক্ষী হিসাবে, গ্রামগুলোতে জীব বৈচিত্রের সংরক্ষণ ও প্রাকৃতিক পরিবেশের উন্নয়নে বন বিভাগের সচেতনতার অভাবে এসব অঞ্চলে খেজুর গাছ অনেকটা বিলুপ্তির পথে।

এক সময় খেজুর গাছের রস ও তার গুড়ের খ্যাতি থাকলেও কালের বিবর্তনে হারিয়ে যেতে বসেছে গ্রাম বাংলার সেই পুরনো ঐতিহ্য।  বরিশাল বিশ^ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মিথী হাওলাদার বলেন, ‘আগের মতো গ্রাম্য রাস্তার দু’পাশে সারি সারি খেজুর গাছ আর নেই। গ্রামের রাস্তা গুলো সংস্কার ও নতুন করে খেজুর গাছ রোপনে মানুষের আগ্রহের অভাবে বাংলার ঐতিহ্যবাহী খেজুর গাছ ও খেজুরের রস ধীরে ধীরে হারিয়ে যাচ্ছে।’

বরিশাল কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক হারুন অর রশিদ বলেন, ‘বাংলাদেশের প্রতিটি অঞ্চলেই খেজুর গাছ প্রায় বিলুপ্তির পথে। গাছিদের খেজুর গাছ কাটার কাজটি শিল্প আর দক্ষতায় ভরা। ডাল কেটে গাছের শুভ্র বুক বের করার মধ্যে রয়েছে কৌশল, রয়েছে ধৈর্য ও অপেক্ষার পালা। এ জন্য মৌসুমে আসার সাথে সাথে দক্ষ গাছিদের কদর বাড়ে। তবে আমাদের অসচেতনতা কারনে খেজুর গাছ বিলুপ্তির পথে।’