শুক্রবার   ২৯ মার্চ ২০২৪   চৈত্র ১৪ ১৪৩০   ১৯ রমজান ১৪৪৫

মোবাইল অপারেটরদের ফাঁদে গ্রাহক

তরুণ কণ্ঠ রিপোর্ট

প্রকাশিত : ০৭:৫৪ পিএম, ৫ সেপ্টেম্বর ২০২১ রোববার

 

মোবাইল অপারেটরগুলো লোভনীয় ইন্টারনেট প্যাকেজের ফাঁদে ফেলে গ্রাহকদের পকেট কাটছে বলে অভিযোগ করেছে টেলি কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (টিক্যাব)।

রোববার (৫ সেপ্টেম্বর) এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ অভিযোগ করেছেন টিক্যাবের আহ্বায়ক মুর্শিদুল হক।

তিনি বলেন, আমরা মোবাইল নেটওয়ার্ক অপারেটরগুলোর ইন্টারনেট প্যাকেজগুলো পর্যালোচনা করে দেখতে পেয়েছি তারা নির্দিষ্ট কিছু প্ল্যাটফর্মের জন্য বিভিন্ন ইন্টারনেট প্যাকেজ বিক্রি করছে।

গ্রামীণফোন- জি৫, হইচই, বায়োস্কোপ, স্কাইপি, জুম, টিমস, ডুয়ো, সোশ্যাল প্যাক, ইউটিউব, টিকটক, জিপি মিউজিক। বাংলালিংক- টফি অ্যাপ, ফেসবুক, ইমো, ইউটিউব, বিপ, স্টুডেন্ট প্যাক, রবি- সোশ্যাল, ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, হোয়াটসঅ্যাপ, জুম, টিমস, টিকটক, গুগল ক্লাসরুম, স্কাইপ, ইমো। টেলিটক- শুধুমাত্র বিভিন্ন অ্যাপের জন্য এবং এয়ারটেল- লাইকি, ফেসবুক ম্যাসেঞ্জার, গুগল ক্লাসরুম ইত্যাদি অ্যাপস শুধু ব্রাউজ করার শর্তে ইন্টারনেট প্যাকেজ বিক্রি করছে।

এতে করে অনেক গ্রাহক প্যাকেজের ডিটেইলস না জেনে লোভনীয় অফারের ফাঁদে পড়ে প্যাকেজ নিলেও দেখা যাচ্ছে নির্দিষ্ট অ্যাপ ছাড়া ইন্টারনেট কাজ করছে না। ফলে তা অনেকাংশে অব্যবহৃত থাকা অবস্থাতেই মেয়াদ শেষ হয়ে যাচ্ছে। আবার অনেকে জেনে প্যাকেজ নিলেও পুরো প্যাকেজ ব্যবহারের আগেই মেয়াদ শেষ হয়ে যাচ্ছে। ফলে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে পুরোপুরি ব্যবহার না করেই গ্রাহকদের সম্পূর্ণ প্যাকেজের টাকা পরিশোধ করতে হচ্ছে।

মুর্শিদুল হক বলেন, অপারেটরগুলো ফোর-জি ডাটা প্যাকেজ বিক্রি করছে কিন্তু গ্রাহকরা ফোর-জি নেটওয়ার্কই পাচ্ছে না। অনেক গ্রাহক হ্যান্ডসেট ফোর-জি না হলেও ভুলবশত ফোর-জি ডাটা কিনে ফেলছেন। আবার ফোর-জি হ্যান্ডসেট হলেও গ্রামাঞ্চলে ফোর-জি নেটওয়ার্ক ঠিকঠাক পাওয়া যাচ্ছে না। আবার শহরাঞ্চলেও অনেক বাসার ভেতরে মিলছে না ফোর-জি নেটওয়ার্ক। ডাটা প্যাকেজটি বাধ্যতামূলক ফোর-জি হওয়ায় দেখা যাচ্ছে গ্রাহকরা তা ব্যবহার করতে পারছেন না। কিন্তু ব্যবহার না করেও তাদের ঠিকই প্যাকেজের পুরো অর্থ পরিশোধ করতে হচ্ছে।

টিক্যাব আহ্বায়ক বলেন, অপারেটরগুলো বান্ডেল অফার নামে ইন্টারনেট, টকটাইম ও এসএমএস এর সমন্বয়ে বিভিন্ন প্যাকেজ গ্রাহকদের কাছে বিক্রি করছে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যাচ্ছে অনেক বেশি ডাটা, মিনিট ও এসএমএস দেওয়া হলেও মেয়াদ দেওয়া হচ্ছে কম। ফলে তিন দিন, সাত দিন, ১৫ দিন বা ৩০ দিনের মধ্যে সিংহভাগ গ্রাহকই তাদের বান্ডেল অফারের পুরোটা ব্যবহার করতে পারছে না। অব্যহৃত থেকে যাচ্ছে প্যাকেজের বড় একটি অংশ। কিন্তু অপারেটরগুলো মেয়াদোত্তীর্ণ সেই ডাটা চক্রাকারে পুনরায় গ্রাহকদের কাছে বিক্রি করে হাতিয়ে নিচ্ছে কোটি কোটি টাকা।

তিনি বলেন, অবিলম্বে গ্রাহকদের লোভনীয় প্যাকেজের ফাঁদে ফেলে পকেট কাটা বন্ধ করতে হবে। নির্দিষ্ট অ্যাপ ব্যবহার ও প্যাকেজের মেয়াদ বেঁধে দিয়ে গ্রাহকদের টাকা কেটে নেওয়ার এ ফর্মুলা সম্পূর্ণ অযৌক্তিক ও অনৈতিক বলে আমরা মনে করি।

টিক্যাবের পক্ষ থেকে গ্রাহকদের স্বার্থ রক্ষায় যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ এবং বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনকে (বিটিআরসি) আহ্বান জানানো হয়।