অতিরিক্ত চিনি শিশুদের মরণফাঁদ!
নিউজ ডেস্ক
কক্সবাজার সৈকত
প্রকাশিত : ০৫:২০ এএম, ২৬ নভেম্বর ২০১৮ সোমবার
বর্তমানে শিশুরা এমন কিছু রোগে আক্রান্ত হচ্ছে, যেগুলো শিশুদের দেহে বাসা বাঁধতে পারে এমন সম্ভাবনাও ছিলো সুদূর কল্পনা! বিশেষ করে টাইপ-টু ডায়াবেটিস ও ফ্যাটি লিভার ডিজিজ- এ দুটি রোগ পূর্বে কখনো শিশুদের শরীরে দেখা যেত না।গত শতাব্দির আশির দশক পর্যন্তও এই রোগ দুইটিকে অ্যালকোহলিক বা মদ্যপদের রোগ হিসেবে গন্য করা হতো।
আজকালকার দিনে প্রায় ৩০ শতাংশ শিশু কোনো না কোনোভাবে নন অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার ডিজিজে আক্রান্ত। টাইপ- টু ডায়াবেটিস এর প্রকোপও এখন টাইপ- ওয়ান ডায়াবেটিস এর মতোই ছড়িয়ে পড়েছে। আমাদের লিভার বা যকৃতে অ্যালকোহলের ও চিনির বিপাক ক্রিয়া প্রায় একই রকমের।এর অনেকখানি যুক্তি আছে, কারণ অ্যালকোহলও কিন্তু আমরা চিনির গাঁজন প্রক্রিয়া থেকেই পাই, সোজা বাংলায় যেটিকে বলা হয় মদ।
তবে অ্যালকোহল ও চিনির অণুর মধ্যে একটি বড় রকমের পার্থক্যও রয়েছে। অ্যালকোহলের ক্ষেত্রে ঈস্ট নামক ছত্রাক প্রথম ধাপের বিপাকীয় কার্য সম্পাদন করে, অন্যদিকে চিনির ক্ষেত্রে প্রথম ধাপের বিপাক সম্পন্ন হয় আমাদের যকৃতে। কিন্তু পার্থক্য শুধু ওটুকুতেই প্রথম ধাপের বিপাক সম্পন্ন হবার পর লিভারের কাছে চিনি ও অ্যালকোহল একই বস্তু! চিনি বা অ্যালকোহল- এর যেকোনো একটি দ্বারা যদি আপনার লিভার বোঝাই হয়ে যায়, আপনি একই রকম রোগে ভুগবেন। সুতরাং অতিরিক্ত চিনিযুক্ত খাবার খাওয়ার ফলে আপনি এমন সব রোগে ভুগতে পারেন, যেগুলো আপনার অতিরিক্ত মদ খাওয়ার ফলে হওয়ার কথা ছিলো!
যত দিন যাচ্ছে, শহরের বাচ্চাদের মধ্যে ফাস্টফুড, চকলেট, আইসক্রিমের জনপ্রিয়তা ততই বাড়ছে। মা বাবাও বাচ্চাদের আবদার মিটাচ্ছেন কোনো চিন্তা ভাবনা ছাড়াই। এতে যে পরিমাণ সুগার শিশুর দেহে গিয়ে জমা হচ্ছে, তা বার্ণ করা বা পোড়ানোর জন্য শারীরিক পরিশ্রমও তাদের করতে হচ্ছে না বা করার সুযোগও পাচ্ছে না। তাই উন্নত দেশগুলোর শিশুদের মতো আমাদের দেশের শিশুদের ক্ষেত্রেও স্থুলতা একটি প্রধান সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ চর্চা বন্ধ না করলে আমাদের চারপাশে অসুস্থ প্রজন্ম বেড়ে উঠবে, এ নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই! এজন্য অভিভাবকদের সচেতনতা জরুরি।