শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ৫ ১৪৩১   ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

তরুণ কণ্ঠ|Torunkantho
৬৫৫

ধানের মাজরা পোকা দমন করবেন যেভাবে

নিজস্ব প্রতিবেদক    

প্রকাশিত: ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২২  

মাজরা পোকা ধানের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। এই পোকা ধানগাছের কাণ্ডে ঢুকে কাণ্ডকে নষ্ট করে ফেলে। ফলে ধানের ফলন কমে যায়। মাজরা পোকার আক্রমণে ফলন কমে যায় ১৩ থেকে ২৬ শতাংশ। তবে ব্যাপক আক্রমণ হলে ৩০ থেকে ৭০ শতাংশ পর্যন্ত ফলনের ঘাটতি হতে পারে। ফলে ধান চাষের জন্য মাজরা পোকা দমন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কীভাবে ধানের এ পোকা দমন করা যায় সে বিষয়ে পরামর্শ দিয়েছে কৃষি তথ্য সার্ভিস।

তথ্য সার্ভিস বলছে, তিন প্রজাতির মাজরা পোকা আছে। এগুলো হলো- হলুদ মাজরা, কালোমাথা মাজরা এবং গোলাপী মাজরা পোকা। এ পোকার ক্ষতি থেকে ফসল বাঁচাতে যা করবেন-


১. ক্ষেতে ডালপালা পুতে পার্চিং করা হলে পাখি বসে মাজরা পোকা ও মথ খেয়ে কমিয়ে ফেলে। মাজরা পোকার পূর্ণবয়স্ক মথের প্রাদুর্ভাব দেখা গেলে ধানক্ষেতের পাশে আলোক ফাঁদ বসিয়ে মাজরার মথ সংগ্রহ করে ধ্বংস করতে হবে।

২. ক্ষেত নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করে হাতজাল দিয়ে মাজরা পোকার মথ ও ডিম সংগ্রহ করে ধ্বংস করতে হবে।

৩. প্রাকৃতিকভাবেও মাজরা পোকা ধ্বংস করা যায়। লেডি বার্ড বিটল, মিরিড বাগ, লম্বাওড়, উড়চুঙ্গা, লম্বাশুড় ঘাসফড়িং, মিরিড বাগ এসব পোকা মাজরা পোকার ডিম খায়।

৪. পাখি, মাছ, ব্যাঙ, ড্যামসেল ও ড্রাগন ফ্লাই মাজরা পোকার মথ খায়। তাছাড়া কিছু পরজীবী যেমন- ট্রাইকোগ্রামা, টেলিনোমাস, টেট্রাটিকাস মাজরা পোকার ডিমকে আক্রান্ত করে নষ্ট করে দেয়।

majra-2

৫. তবে সরাসরি পরজীবী পোকার কোনো ব্যবস্থা নিতে না পারলে বালাইনাশক ব্যবহার করা যেতে পারে। যেহেতু মাজরা পোকা গাছের কাণ্ডের ভেতরে অবস্থান করে, তাই সিস্টেমিক জাতীয় বালাইনাশক ব্যবহার করতে হবে। কীটনাশক হিসেবে ছায়ানট্রানিলিপ্রোল + লুফেনিউরন, ফ্লুবেনডিয়ামাইড + থায়াক্লোপ্রিড, কাটাপ-১২% + এসিটামিপ্রিড-৩%, কার্বোফুরান, ক্লোরোপাইরিফস, এসিফেট, কার্বোসালফান, কারটাপ, ফিপ্রোনিল, ফ্লুবেনডিয়ামাইড, থায়ামেথোক্সাম + ক্লোরানট্রানিলিপ্রোল এসব গ্রুপের ওষুধ অনুমোদিত মাত্রায় ব্যবহার করতে হবে।

৬. একই গ্রুপের কীটনাশক একই পোকা দমনের জন্য পর্যায়ক্রমে বা প্রতি মৌসুমে ব্যবহার না করে বিভিন্ন গ্রুপের কীটনাশক ব্যবহার করলে ভালো ফলাফল পাওয়া যায়।

৭. যেসব এলাকায় প্রতিবছর এই পোকার আক্রমণ হয় সেসব এলাকায় আমন ধান কাটার পর নাড়া চাষ/পুড়িয়ে পুত্তলি নষ্ট করা যায়।

কীটনাশক ব্যবহারের ক্ষেত্রে কিছু সতর্কতা অবলম্বনের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। যেমন- সাইপামেথ্রিন, আলফা- সাইপামেথ্রিন, নামডা সাইহেলোথ্রিন, ডেলথামেথ্রিন, ফেনভেলারেট গ্রুপের কীটনাশক ব্যবহার করা যাবে না। এমনকি এই গ্রুপের কীটনাশক অনুমোদিত গ্রুপের কীটনাশকের সঙ্গে মিশিয়েও ব্যবহার করা যাবে না। প্রতি বর্গমিটারে ২-৩টি স্ত্রী মথ পাওয়া যায় বা ১০ থেকে ১৫ শতাংশ কুশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ক্ষেত্রবিশেষ ৫ শতাংশ কুশি ক্ষতিগ্রস্ত হলেও কীটনাশক ব্যবহার করা যাবে।