শুক্রবার   ২৯ মার্চ ২০২৪   চৈত্র ১৪ ১৪৩০   ১৯ রমজান ১৪৪৫

তরুণ কণ্ঠ|Torunkantho
১০০

কুমিল্লাসহ সারাদেশে পূঁজা মন্ডপে সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসী হামলার বি

মাগুরা প্রতিনিধি ঃ

প্রকাশিত: ১৮ অক্টোবর ২০২১  

রবিবার ১৭ অক্টোবর সকাল ১০ টার সময় সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন গণকমিটির আহ্বায়ক এটিএম মহব্বত আলী এবং সমাবেশ পরিচালনা করেন সদস্য সচিব প্রকৌশলী শম্পা বসু। বক্তব্য প্রদান করেন, গণকমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক কাজী ফিরোজ , বিশিষ্ট বামপন্থী নেতা নিখিল রঞ্জন মিত্র, গণকমিটির সদস্য বাহারুল হায়দার বাচ্চু । 

নেতৃবৃন্দ বলেন, বাজারে এক কেজি মোটা চালের দাম ৫২ টাকা। এক লিটার সয়াবিন তেলের দাম ১৫০ টাকা। কিছুদিন আগেও এক কেজি ব্রয়লার মুরগি ১২০ টাকায় কেনা যেত, এখন সেটা ১৭৫ টাকা। সাধারণ মানুষ প্রতিদিন যা ব্যবহার করে তার প্রায় সবকিছুরই দাম বাড়ছে। খাদ্য দ্রব্য যেমন চাল, আটা, ময়দা, সয়াবিন তেল, মসুর ডাল, চিনি, পিয়াজ, মুরগি, ডিম ইত্যাদি। দাম বেড়েছে এবং বেড়েই চলেছে সব ধরণের খাদ্যপণ্যের। এর সাথে তাল মিলিয়ে গায়ে মাখার সাবান যা এখন সুগন্ধি সাবান বলে পরিচিত তার দামও বেড়েছে, দাম বেড়েছে কাপড় কাচা সাবান, টিস্যু, টুথ পেস্ট, নারিকেল তেল, সরিষার তেল এ সব কিছুর। বিশ্ব বাজারের অজুহাতে এলপিজি’র ১২ কেজির সিলিন্ডারের দাম গত ৪ মাসে ৪ বার বাড়িয়ে এখন তা নির্ধারণ করা হয়েছে ১২৫৯ টাকা। 

বক্তাগণ বলেন, এক বছরে কোনো পণ্যের দাম ২-৩ শতাংশ বাড়লে তা মেনে নেওয়া যায়। কিন্তু এক বা তিন সপ্তাহের মধ্যে ২০-২৫ শতাংশ দাম বাড়লে তাকে কোনোভাবে স্বাভাবিক বলা যায় না। এই অস্বাভাবিক বাজার পরিস্থিতি যারা তৈরি করছে, তারা সব সময় ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যাচ্ছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কর্তাব্যক্তিদের দেখা যায়, মাঝেমধ্যে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠক করে পণ্যের দাম বেঁধে দেন, কিন্তু পরে সেই সিদ্ধান্ত কার্যকর হয় না। ব্যবসায়ীরা স্বেচ্ছাচারী কায়দায় দাম বাড়িয়ে থাকেন। এই সিন্ডিকেট ভেঙে দেওয়ার জন্য বাজার তদারক ব্যবস্থা জোরদার করা প্রয়োজন। বাজারের সরবরাহ ঠিক রাখতে টিসিবির মাধ্যমে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের জোগান নিশ্চিত করার দাবি জানান বক্তাগণ । 

নেতৃবৃন্দ বলেন, কুমিল্লায় কথিত কোরানের অবমাননা করার অজুহাতে পূঁজা মন্ডপে হামলা করা হয়েছে। এ ঘটনার জেরে চাঁদপুরের হাজিগঞ্জে তৌহিদী জনতার নামে মিছিল করে মন্ডপে হামলা, ভাংচুর ও সেখানে হতাহতের ঘটনা ঘটেছে, হাতিয়ায় এবং বাঁশখালীসহ সারা দেশের বিভিন্ন স্থানে হামলার ঘটনা ঘটেছে যা পূর্ব পরিকল্পিত ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত। 

নেতৃবৃন্দ বলেন, অতীতে রামু, নাসিরনগর, পাবনার সাথিয়া, বাঁশখালী, গোবিন্দগঞ্জ, রংপুর, সুনামগঞ্জের শাল্লাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন সময়ে ফেসবুকে ও নানা মাধ্যমে গুজব ছড়িয়ে ধর্মীয় ও জাতিগত নিপীড়ন ও হামলার ঘটনা ঘটিয়েছে। যখন যে সরকার ক্ষমতায় থাকে তাদের দলীয় লোকজনই প্রধানত এসব সাম্প্রদায়িক হামলায় জড়িত ও নেতৃত্ব দিয়ে থাকে। বর্তমানেও বিভিন্ন স্থানে আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে যার কোনটিরই বিচার হয়নি। ফলে শাসকদের আশ্রয়ে প্রশ্রয়েই দেশে সাম্প্রদায়িক হামলার ঘটনা ঘটছে। বর্তমান সরকার সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষের জান-মাল রক্ষা ও ধর্ম পালনের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে। কুমিল্লা-হাজীগঞ্জের ঘটনা তার সর্বশেষ প্রমাণ। 

নেতৃবৃন্দ বলেন, দুর্নীতি, দুঃশাসন, লুটপাট, দ্রব্যমূল্যবৃদ্ধি, গণতন্ত্রহীনতায় জনগণ যখন সরকারের উপর চরমভাবে ক্ষুব্ধ তখন জনগণের দৃষ্টি অন্যদিকে সরানোর জন্য শাসক গোষ্ঠীও সাম্প্রদায়িকতাসহ নানা ষড়যন্ত্র চক্রান্ত অতীতে করেছে বর্তমানেও করছে বলে দেশবাসীর সন্দেহ রয়েছে।
নেতৃবৃন্দ কুমিল্লাসহ সারাদেশে সাম্প্রদায়িক হামলার ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে দায়ীদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার-বিচারের দাবি জানান। একই সাথে ধর্মান্ধ-সাম্প্রদায়িক অপশক্তি ও শাসকশ্রেণির সকল ষড়যন্ত্র-চক্রান্তের বিরুদ্ধে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষা, দ্রব্যমূল্যবৃদ্ধি রোধ ও গণতন্ত্র-ভোটাধিতার প্রতিষ্ঠার জন্য সকল বাম প্রগতিশীর গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল-ব্যক্তি-গোষ্ঠীকে ঐক্যবদ্ধ গণআন্দোলন গড়ে তোলার জন্য আহ্বান জানান। 

এই বিভাগের আরো খবর