শুক্রবার   ২৯ মার্চ ২০২৪   চৈত্র ১৫ ১৪৩০   ১৯ রমজান ১৪৪৫

তরুণ কণ্ঠ|Torunkantho
৩৭৯

সুনামগঞ্জ থেকে সাংবাদিক মুশফিকুরকে উদ্ধার

সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ৬ আগস্ট ২০১৯  

ঢাকার গুলশান এলাকা থেকে শনিবার ‘নিখোঁজ’ হওয়া মোহনা টেলিভিশনের বিশেষ প্রতিনিধি মুশফিকুর রহমানকে সুনামগঞ্জে পাওয়া গেছে। মঙ্গলবার ভোরে সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার সুনামগঞ্জ-সিলেট সড়কের গোবিন্দপুর এলাকায় তাকে পাওয়া যায়। পরে পুলিশ গিয়ে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে আসে।

পুলিশ জানায়, মুশফিকুর রহমান ভোরে গোবিন্দপুর এলাকার মসজিদের সামনে যান। সেখানে থাকা এক মুসল্লির কাছে জানতে চান, ‘তিনি কোথায় আছেন’। এরপর তাঁর পরিচয় দেন। এ সময় স্থানীয় বাসিন্দারা মোহনা টেলিভিশনের জেলা প্রতিনিধি কুলেন্দু শেখর দাসের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। পরে তিনি পুলিশ নিয়ে গিয়ে মুশফিককে উদ্ধার করে হাসাপাতালে নিয়ে আসেন।

গোবিন্দপুর এলাকার বাসিন্দা সংবাদকর্মী ফুয়াদ মনি জানান, স্থানীয় লোকজন সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে তাকে খবর দেন। তিনি সেখানে যাবার পর মুশফিক তার পরিচয় পেয়ে তাকে জড়িয়ে ধরে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। ফুয়াদ পরে মুঠোফোনে মুশফিককে তার পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করিয়ে দেন। তিনি খুবই ক্লান্ত ছিলেন। তার চোখ-মুখ ফোলা ছিল। এক পর্যায়ে তিনি জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। পরে মুসল্লিরা তাকে মসজিদের ভেতরে নিয়ে যান। 

সদর হাসপাতালে মুশফিকুর রহমান জানান, তিনি কিভাবে এখানে এসেছেন কিছুই জানেন না। শনিবার গুলশান এলাকায় তার চোখে কোনো কিছু ছিটানো হয়। এরপর তিনি শুধু হেঁটেছেন মনে হয়েছে। এক পর্যায়ে তিরি আর কোনো কিছু বুঝতে পারেননি। যখন জ্ঞান ফিরে তখন টের পান চোখ, হাত বাধা। কয়েকজন লোক ছিল। তিনি তাকে কেন ধরে আনা হয়েছে জানতে চান। ওই লোকজন তাকে মেরে ফেলার কথা বলে। এই তিনদিন তাকে শুধু একটি কেক ও কিছু পেয়ারা খেতে দেওয়া হয়েছে। ভাত খেতে চাইলে তাকে মারধর করা হয়। তাকে কয়েকবার মারধর করা হয়েছে বলে জানান তিনি। কেন তাকে ধরে নেওয়া হয়েছে তা ওই লোকজন বলেনি। একবার বলেছে তাকে গুলি করে মারবে, আরেকবার বলে জবাই করবে। 

তিনি সুনামগঞ্জে কিভাবে এলেন কিছুই বুঝতে পারেননি। গাড়ি থেকে নামানোর পর তাকে বলা হয়েছে দৌঁড় দিতে। এরপর তিনি দৌঁড়াতে থাকেন। মুশফিক বলেন, আল্লাহ আমাকে বাঁচিয়েছেন। কেন কারা এটা করেছে আমি বুঝতে পারছি না। 

হাসপাতালের চিকিৎসক নাসির উদ্দিন জানান, মুশফিকের শরীরে আঘাতের কোনো চিহ্ন না থাকলেও তাকে বেশ মারধর করা হয়েছে। ব্যথা আছে। চোখে কোনো কিছু দেওয়া হয়েছিল। এ কারণে তিনি ঝাপসা দেখছেন। তবে বিশ্রাম নিলে এসব ঠিক হয়ে যাবে।

সুনামগঞ্জ সদর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) জিন্নাতুল ইসলাম বলেন, আমরা ঢাকায় তার পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। ঢাকা থেকে লোকজন আসছেন। তারা এলে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এখন তিনি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।

সাংবাদিক মুশফিকুর রহমান ঢাকার গুলশান এলাকা থেকে গত শনিবার নিখোঁজ হন। তিনি ঢাকার মিরপুরে থাকতেন। কুমিল্লা জেলার দাউদকান্দি উপজেলার চরগোয়ালি গ্রামে বাড়ি তার।

এই বিভাগের আরো খবর